হাতে আর মাত্র একদিন। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে চলেছে ৪৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। তার আগে এখন চূড়ান্ত প্রস্তুতি বইমেলা প্রাঙ্গণে। সব স্টলের কাজ প্রায় শেষের পথে। কোথাও কোথাও চলে এসেছে বইও। বৃহস্পতিবার বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা যাচ্ছে, এবার ছোট বড় প্রকাশনা সংস্থা, লিটল ম্যাগাজিন মিলিয়ে বইমেলায় স্টলের সংখ্যা ১০০০ ছুঁয়েছে। এই মেলা সল্টলেকের বোইমেলা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে ১৮ জানুয়ারী থেকে ৩১ জানুয়ারী, ২০২৪ পর্যন্ত।
সবকটি রাজ্য অংশ নিচ্ছে বইমেলায়
ভারতের সবকটি রাজ্যে এবং পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলার স্টল থাকছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায়। প্রথমবারের মত মেলায় চালু করা হচ্ছে ডিজিটাল ম্যাপ। প্রত্যেকটি গেটে লাগানো থাকবে কিউআর কোড। স্মার্টফোনে সেই কোড স্ক্যান করলেই চলে আসবে ম্যাপ। এবার বইমেলায় নয়টি গেট থাকছে। তার মধ্যে থাকছে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১২৫তম জন্ম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গেট, বেথুন স্কুলের ১৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গেট, লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজের আদলে গেট। উদ্বোধনে সৃষ্টি সম্মান দেওয়া হবে সাহিত্যিক বাণী বসুকে। এবার প্রথমবারের জন্য বইমেলায় শুরু হবে সমরেশ মজুমদার স্মৃতি সম্মান। এবার সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেবেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।
বইমেলার জন্য অতিরিক্ত মেট্রো ও বাস
বইমেলায় পার্কিং সমস্যা কাটাতে এবারে ছুটির দিনগুলোতে সরকারি অফিসের পার্কিং ব্যবহার করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে গিল্ডের তরফে। বিকাশ ভবন, কেএমডিএ ভবনের পার্কিংয়ে গাড়ি রাখতে পারবেন সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বিশেষ মেট্রো পরিষেবা থাকবে বইমেলা চলাকালীন। দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত ১২ মিনিট অন্তর চলবে মেট্রো। মেট্রো সেই সময়ের মধ্যে প্রতিদিন গ্রিন লাইনে ১২০টি পরিষেবা চালাবে। ৬০ টি পূর্ব-বাউন্ড এবং ৬০টি পশ্চিম-বাউন্ড ট্রেন চালাবে মেট্রো। সাধারণত ১০৬টি পরিষেবা চালায় তারা। এই লাইনে মেট্রো পরিষেবা সকাল ৬.৫৫ মিনিট থেকে চালু হবে। রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে পরিষেবা। পূর্ব-পশ্চিম করিডোরে (গ্রিন লাইন) মেলার দিনগুলিতে দুপুর ২.৫৫ মিনিট থেকে রাত ৯.১৯ মিনিট পর্যন্ত ১২ মিনিটের ব্যবধানে পরিষেবাগুলি চালানো হবে।বইমেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যে বিশেষ বাসের ব্যবস্থাও করা হয়েছে সরকারিভাবে। জেলা থেকে আগত মানুষদের সুবিধার্থে নেওয়া হয়েছে একাধিক বিশেষ উদ্যোগ।
বইমেলায় ২০টি দেশের উপস্থিতি
এবারে মেলায় অংশগ্রহণ করছে বিশ্বের ২০টি দেশ। তালিকায় রয়েছে ব্রিটেন, আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, রাশিয়া, স্পেন, পেরু, কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, কিউবা, ডমিনিকান রিপাব্লিক, গুয়াতেমালা, কোন্তারিকা, থাইল্যান্ড। ১২ বছর পর অংশ নিচ্ছে জার্মানি। এবারে নতুন রূপে সেজে উঠতে চলেছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। সেখানে থাকছে বাংলাদেশের প্রায় ৫০টি নামজাদা প্রকাশনা সংস্থা।
মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বইও প্রকাশিত হবে
জানা যাচ্ছে, এ বছর জাগো বাংলার স্টলে থাকবে বড় চমক। এই স্টল থেকেই প্রকাশিত হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঁচটি বই। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জাগো বাংলার স্টলের থিম ‘ভারতীয় সংবিধান’। এবার এই স্টলে ভারতীয় সংবিধানের ইতিহাস ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারা তুলে দেওয়া হবে। এছাড়া ওই স্টল থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর পাঁচটি বই প্রকাশিত হবে। এই পাঁচটি বইয়ের মধ্যে থাকছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা নিয়ে একটি বই। এর সঙ্গে হেরিটেজ নিয়ে একটি বই থাকছে। আরও জানা গিয়েছে, ভুলে যাওয়া স্বাধানীতা সংগ্রামীদের নিয়ে একটি বই লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী সেই বইটি এবারের বই মেলায় প্রকাশিত হবে।