
শীতকালে আগুন লাগার আশঙ্কা অন্যসময়ের তুলনায় বেড়ে যায়। তাই বাড়তি ব্যবস্থা নিচ্ছে দমকল। রাজ্যের অগ্নিনির্বাপণ ও জরুরি পরিষেবা মন্ত্রী সুজিত বসু সোমবার জানান, ২৪, ২৫, ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর, এই চার দিনে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দমকল বাহিনীকে স্ট্যান্ড-বাই মোডে রাখা হবে। বিকেল ৪টে থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত যে কোনও অগ্নিকাণ্ড বা জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
সুজিত জানান, এই চার দিনে শহরের কৌশলগত এলাকায় মোট ৯টি দমকল ইউনিট মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে দমকল বিভাগের ১৪টি মোটরসাইকেল টহলও চালু থাকবে। অ্যালেন পার্ক, পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট ক্রসিং, কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম এলাকা, যাদবপুর থানার কাছে, টালিগঞ্জ ও গড়িয়া মেট্রো স্টেশনের সংলগ্ন অঞ্চল, হাজরা ক্রসিং, শিয়ালদা স্টেশন, বো ব্যারাক, ইএম বাইপাসের ধাবা এলাকা এবং বেলগাছিয়া ক্রসিংয়ে দমকল বাহিনী প্রস্তুত থাকবে।
সুজিত বসু স্পষ্ট করে জানান, উৎসবের মরশুমে ছাদের রেস্তোরাঁগুলিতে কোনওভাবেই আতশবাজি পোড়ানো যাবে না। আগুন লাগার ঝুঁকি এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। সম্প্রতি গোয়ার একটি নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের মৃত্যুর ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, কাঠের ছাদের উপর বৈদ্যুতিক আতশবাজি পড়ার কারণেই সেই দুর্ঘটনা ঘটেছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই এবার বাড়তি সতর্কতা।
দমকল দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, উৎসবের সময় কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না। সব রকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকছে দমকল বাহিনী। অন্যদিকে, বড়দিন ও নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম কেন্দ্র পার্ক স্ট্রিট ইতিমধ্যেই পুলিশি নজরদারিতে রয়েছে। রবিবার থেকেই সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ১,৫০০-র বেশি পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সাদা পোশাকের গোয়েন্দা ও ইউনিফর্ম পরা পুলিশকর্মীরা এলাকাজুড়ে নজরদারি চালাচ্ছেন। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবে ট্রাফিক পুলিশ, তবে প্রয়োজনে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ট্রাফিক বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্তা বলেন, পথচারীদের ভিড় অতিরিক্ত হলে রেলিং বসিয়ে যান চলাচল ও পথচারীদের চলাচল আলাদা করা হবে। একেবারে শেষ উপায় হিসেবেই যান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সোমবার সন্ধে পর্যন্ত পার্ক স্ট্রিটে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাড়াতে এলাকায় ওয়াচটাওয়ার বসানো হয়েছে এবং কিছু উঁচু বাড়ির ছাদ নজরদারির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সবশেষে সুজিত বসু জানান, আগামী জানুয়ারিতে একটি নতুন ফায়ার স্টেশন উদ্বোধন করা হবে। পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে আরও ৩০টি নতুন ফায়ার স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে ১০টির কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।