রাজ্যে গত কয়েকদিন ধরেই করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এই আবহে বুধবার থেকে গত একমাস ধরে জারি থাকা কঠোর বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করছে রাজ্য সরকার। এদিকে আবার বুধবার জামাইষষ্ঠী। বাঙালির উৎসবের দিন। বাড়িতে মেয়ে-জামাইকে ডেকে খাওয়ানোর দিন। তবে করোনাকালে এবার এই সামাজিক উৎসব কিছুটা জৈলুস হারালেও তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ষষ্ঠীর আগের দিন রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হল।
বুধবার জামাইষষ্ঠী উপলক্ষ্যে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে নবান্নের তরফে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জরুরী পরিষেবা ছাড়া রাজ্য সরকারের সমস্ত দফতর বুধবার বন্ধ থাকবে। জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে বিগত কয়েক বছর ধরে অর্ধ দিবস ছুটি পাচ্ছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। ওই দিন দুপুর ২টো পর্যন্ত অফিস করতে হত কর্মীদের। কিন্তু করোনা আবহে ওইদিন এবার সম্পূর্ণ ছুটির ঘোষণা করল নবান্ন। ফলে এবার আর একবেলা নয় শ্বশুরবাড়িতে দুই বেলাই ভালমন্দ আহারের মধ্যে দিয়ে কাটাতে পারবেন সরকারি কর্মচারীরা।
২০১১ সাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর জামাইষষ্ঠীর দিন হাফ ছুটি দেওয়ার কথা প্রথম ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার পুরো ছুটি পাওয়ায় স্বভাবতই খুশির হাওয়া সরকারি কর্মীদের মধ্যে। এতদিন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য ছুটি ঘোষণা হলেও এই প্রথম সামাজিক অনুষ্ঠানে পুরো ছুটি ঘোষণা করল নবান্ন।
এদিকে বুধবার থেকেই রাজ্যে কিছু ছাড় দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি অফিস খোলার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে ছুটি থাকার জন্য ১৭ তারিখ থেকে ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করবে সমস্ত সরকারি অফিস।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ রুখতে রাজ্যে বহাল রয়েছে বিধিনিষেধ। সোমবার কিছু শিথিলতা সহ ওই বিধিনিষেধের মেয়াদ ১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, গণপরিবহণ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ পাওয়া যাবে না বাস। ওঠা যাবে না স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে। বন্ধ থাকবে মেট্রো পরিষেবাও। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া চলাচল করা বাস্তবিকই অসম্ভব। ফলে জামাইরা শ্বশুড়বাড়ি গিয়ে শাশুড়ির হাতে তৈরি সুস্বাদু পদ আদৌ কব্জি ডুবিয়ে খেতে পারবেন কিনা সেবিষয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ এদিকে, মাছের প্রজনন বৃদ্ধির জন্যই রাজ্য সরকারের তরফে প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত- দু-মাস সমুদ্রে মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জামাইষষ্ঠী আগে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে। জামাইদের পাতে ইলিশ তুলে দিতে সোমবারই দিঘা মোহনা, শঙ্করপুর ও পেটুয়ায়ঘাট মৎস্য বন্দর থেকে ইলিশের খোঁজে সমুদ্রে পাড়ি দিচ্ছে বেশকিছু ট্রলার। জামাইষষ্ঠীর আগেই ফিরে আসবে সেগুলি। দিঘার পাইকারি বাজারে এই মাছ উঠবে পরদিন সকালে অর্থাৎ ১৭ তারিখ। কলকাতা সংলগ্ন বাজারগুলিতে বছরের নতুন ইলিশের দেখা মিলতে পারে পরদিন অর্থাৎ ১৮ জুন। তবে মায়ানমারের ইলিশ রাজ্যে এসে পৌঁছেছে৷