গড়িয়ার আদর্শনগরে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। বুধবার বিকেলে একটি ভাড়া বাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতরা হলেন তরুণ দাস (৪৫) এবং তাঁর স্ত্রী আশা দাস (৩৫)। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, স্ত্রীকে খুন করে স্বামী আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি খুন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
হাসিখুশি সকাল, বিকেলে মর্মান্তিক পরিণতি
প্রতিবেশী এবং বাড়ির মালিকের দাবি, বুধবার দুপুরে দম্পতি কাজ থেকে ফিরে বেশ হাসিখুশি ছিলেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন, এমনকি রসিকতাও করেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁদের মৃত অবস্থায় দেখতে হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি কেউ।
দম্পতির ঝুলন্ত দেহ
বাড়ির মালিক যমুনা মণ্ডল জানিয়েছেন, দুপুরে আশার বোনের ছেলে স্কুল থেকে ফিরে মামা-মাসির ঘরে যায়। সেখানেই সে ফ্যানের সঙ্গে মেসো তরুণকে ঝুলতে দেখে। ভয়ে ছুটে গিয়ে মাকে খবর দেয়। তখনই আশার ঝুলন্ত দেহও দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবেশীদের দাবি, আশাকে খাটের উপর শোয়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর গলায় গভীর দাগ ছিল এবং গাল দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। ফলে পুলিশের অনুমান, প্রথমে স্ত্রীকে খুন করে স্বামী তরুণ আত্মঘাতী হয়েছেন।
৬ মাস ধরে ভাড়া ছিলেন দম্পতি
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তরুণ এবং আশা গত ছয় মাস ধরে গড়িয়ার আদর্শনগরের গুরুপদ মণ্ডলের বাড়িতে ভাড়া থাকছিলেন। শান্ত স্বভাবের দম্পতি হিসেবে এলাকাতেও তাঁদের বিশেষ পরিচিতি ছিল না।
পুলিশের তদন্ত শুরু
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটি নিছক আত্মঘাতী ঘটনা নাকি এর পেছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য
প্রতিবেশীদের মতে, তরুণ-আশা দম্পতি খুব সাধারণ জীবন যাপন করতেন। তাঁদের মধ্যে কোনও অশান্তির ইঙ্গিতও কখনও মেলেনি। তাই আচমকা এই ঘটনায় হতবাক এলাকার মানুষ।
নেপথ্যে পারিবারিক অশান্তি নাকি আর্থিক চাপ?
তদন্তকারীরা দম্পতির পারিবারিক জীবন এবং আর্থিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। তাঁদের মোবাইল ফোন এবং ব্যক্তিগত নথি পরীক্ষা করে ঘটনার পেছনের কারণ জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।