হাওড়া ব্রিজ রাস্তা সারানোর বিটুমিনের ক্রমাগত প্রলেপে ভারি হয়ে গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই যা সারানোর কাজ শুরু হয়েছে। এবার ব্রিজের স্বাস্থ্যের অন্য একটি বিষয় নিয়ে চিন্তায় দায়িত্বে থাকা বন্দর কর্তৃপক্ষ। মনে করা হচ্ছে, গুটখার পিকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ব্রিজের হ্যাঙ্গার। তাই প্রায় ২০ বছর পর ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আইআইটি মাদ্রাজের বিশেষজ্ঞদের। ব্রিজের ইস্পাতের কাঠামো ঠিকঠাক রয়েছে কী না, তা খতিয়ে দেখবেন তাঁরা।
অডিট শেষ হলে সুপারিশের ভিত্তিতে কাজ করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি এজেন্সি নিয়োগ করতে পারে। “সেতুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। আমরা শীঘ্রই এটির কাজ শুরু করব,” বুধবার বন্দরের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান রথেন্দ্র রমন বলেছেন। প্রাথমিকভাবে এখনই বলা যাচ্ছে না যে, কাঠামোটি কোনো বিপদের মধ্যে রয়েছে। ১৫৫৫ ফুট দীর্ঘ সেতুতে যান চলাচল প্রভাবিত করার মতো কোনও সমস্যা এখনও হয়েছে বলে মনে করছেন না তাঁরা।
বন্দরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একজন আধিকারিক বলেছেন, “আইআইটি মাদ্রাজের যে বিজ্ঞানীর সঙ্গে আমরা পরামর্শ করছি, তিনি আমাদের বলেছেন যে ৮১ বছর ইস্পাত কাঠামোর জন্য কোনও বয়স নয়”।
এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা RITES ৮০ দশকের মাঝামাঝি হাওড়া ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিল। কাজ শুরু হয় ৯০ দশকে। শেষ হয় ২০০৫ সালে। তারপর এবার ফের ওই কাজ শুরু হতে চলেছে। বন্দর কর্মকর্তারা জানান, প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেন্সরের মাধ্যমে কয়েক মাসের মধ্যেই অডিট শেষ করা সম্ভব।
এক আধিকারিক বলেছেন, “প্রকল্পিত ব্যয়ের উপর নির্ভর করে (সুপারিশ বাস্তবায়নের), আমরা পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। খরচ খুব বেশি না হলে IIT Madras মনোনয়নের ভিত্তিতে কাজটি সম্পন্ন করতে পারে। তবে যদি খরচ খুব বেশি হয়, তাহলে আমাদের টেন্ডার ডাকতে হতে পারে।”
২০১৮ সালে মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরই হাওড়া ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা ভাবা হয়েছিল। বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, মূলত কাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে কী না, তা খুঁজে বের করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৩ সালে নির্মিত হাওড়া ব্রিজই বিশ্বের ষষ্ঠ দীর্ঘতম ক্যান্টিলিভার সেতু। ২০১০ সালে বন্দরের তরফে জানানো হয়েছিল, গুটকা এবং পানের পিক সেতুর হ্যাঙ্গারকে ক্ষয় করছে। ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য হ্যাঙ্গারগুলি ফাইবারগ্লাসে ঢাকা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও পিক ফেলা বন্ধ করা যাচ্ছে না। বর্ষার পর হাওড়া ব্রিজে রঙ করা হবে। সাধারণত ৬-৭ বছর পর হাওড়া ব্রিজ রঙ করা হয়।