ইলিশের নাম শুনলে জিভে জল আসে না এমন ভোজন রসিক বাঙালি বোধ হয় কমই আছেন। স্বাদে, গন্ধে ইলিশ মাছের শুধু যে রাজকীয়তা আছে তা কিন্তু নয় রীতিমতো পুষ্টি গুনে ভরপুর । এদিকে নতুন সপ্তাহেই বাংলায় প্রবেশ করতে চলেছে বর্ষা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বস্তির বৃষ্টির দেখা পাবে বঙ্গবাসী। বর্ষার জেরেই একাধিক জেলায় জারি করা হয়েছে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তরবঙ্গে ঢুকবে বর্ষা। সোমবার থেকেই বাড়বে বৃষ্টির পরিমাণ। পাতে এবার সুস্বাদু ইলিশ পড়বে ভোজন রসিক বাঙালি এখন সেই অপেক্ষাতেই রয়েছে।
আগামী ১৫ জুন সমুদ্রের মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। তার পরই ইলিশ ধরার জন্য দলবেঁধে সমুদ্রে পাড়ি দেবেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীরা। এখন চলছে তার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মাছ ধরার ট্রলার মেরামত, জাল সারাই সহ ইত্যাদি শেষ মুহূর্তের কাজে ব্যস্ত মৎস্যজীবীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, পাথরপ্রতিমা, সাগর, নামখানা, সাগরদিঘির মতো জায়গাগুলোতে প্রস্তুত রয়েছে শয়ে শয়ে ট্রলার। এর মাঝেই সমুদ্রে ইলিশ ধরতে গিয়ে মৎস্যজীবীরা যাতে দুর্ঘটনার মুখে না পড়েন তার জন্য নিরাপত্তার পাঠ দিচ্ছেন উপকূলরক্ষী বাহিনীর আধিকারিকরা৷
এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে ১৬ জুন থেকে সাগরে ইলিশ অভিযানে পাড়ি দিতে চলেছেন মৎস্যজীবীরা। তবে জানা যাচ্ছে গত বছরের তুলনায় মাছ ধরার মরশুমের শুরুতে কম সংখ্যক ট্রলার এবার রওনা দিচ্ছে। দৈনন্দিন বাজারে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং ট্রলারগুলিতে সিগন্যাল পাঠানো সংক্রান্ত যান্ত্রিক কিছু সমস্যা থাকায় কম ট্রলার মাছ ধরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী শুক্রবার থেকেই ট্রলারগুলি যাত্রা করবে গভীর সমুদ্রের উদ্দেশ্যে।
গত বছর জালে জড়িয়েছিল কম পরিমাণ ইলিশ। সেই আশঙ্কা রয়েছে এ বছরও। গত বছর ইলিশের উপর নির্ভর করে কম আয় হয়েছে মৎস্যজীবীদের। কিছুক্ষেত্রে লোকসানও গুনতে হয়েছে। এবার ট্রলার ভরে রুপোলি শস্য সংগ্রহ করে আনবেন , এই আশাতেই কোমর বাঁধতে শুরু করেছেন মৎসজীবীরা।
বঙ্গোপাসাগরে এখন পর্যন্ত বড় কোনও দুর্যোগ, নিম্নচাপ কিংবা ঘূর্ণাবর্তের পূর্বাভাস নেই। ফলে আপাতত সমুদ্রে কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন বেশিরভাগ মৎস্যজীবীরা। ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম বেধে দেওয়া হয়েছে। মৎস্য দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মৎস্যজীবীদের জাল ৯০ মিলিমিটার হতে হবে। তাছাড়া ২৩ সেন্টিমিটার থেকে ছোট মাছ ধরা যাবে না। পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের কাছে জিপিআরএস ডিভাইস রাখতে হবে। এমনকি ট্রলারগুলিতে লাইভ জ্যাকেট, লক বুকের মতো সিস্টেম রাখতে হবে।