বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের প্রথম দিনের শেষে মুখে চওড়া হাসি ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । কারণ, প্রথম দিনের শেষে রাজ্য ৯১ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছে । রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র প্রথম দিনের শেষে এই বিপুল বিনিয়োগের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের শেষ দিন। আর এদিন মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন অষ্টম BGBS দারুণ সাফল্য পয়েছে। এবার মোট ৪,৪০, ৫৯৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। গত ৭টি বাণিজ্য সম্মেলনে ৯ লক্ষ কোটিরও বেশি বিনিয়োগ এসেছে রাজ্যে।
মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন রাজ্যে ১.৭২ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার বাইরে এসেছেন। পাশাপাশি অশোক নগরে ৫০ একর জমি ONGC-কে দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বি টু বি তথা ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে এবং বি টু জি তথা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সরকারের প্রতিনিধিদের মধ্যে বেশ কিছু পার্শ্ব বৈঠক হয়। সেই সঙ্গে মউ সাক্ষর হয়। তার পর এদিন বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি জানি সবাই একটাই কথা জানার অপেক্ষায় রয়েছেন। তা হল, কত কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব এল। সাংবাদিকরা তা শুনতেই এখানে বসে আছেন।' তাঁর কথায়, 'বাণিজ্য সম্মেলনের প্রথম দিন অর্থাৎ গতকাল শিল্পপতিরা যে সব অঙ্গীকার করেছেন, তা আমি এখনই হিসাবে ধরছি না। মুকেশ আম্বানি নিজেই বলেছেন, ১ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ করবেন। মুকেশজি ও সজ্জন জিন্দলের সঙ্গে পৃথক ভাবে আমার কথা হয়েছে। সজ্জন জিন্দল আরও একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের কথা জানিয়েছেন। অন্ডাল বিমানবন্দরের ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্টেও তাঁদের আগ্রহ রয়েছে।'
গত সাতটি বাণিজ্য সম্মেলনে মোট ১৯.৫ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নির প্রস্তাব এসেছে বলে জানান মমতা। তার মধ্যে ১৩ লক্ষ কোটি টাকার কাজ ইতিমধ্য সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। আরও ৬ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। তার পর এবারও বাণিজ্য সম্মেলনে মোট ৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার লগ্নির প্রস্তাব এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, এবারের বাণিজ্য সম্মেলনে মোট ২১২টি মৌ সাক্ষর হয়েছে। ৫ হাজার লগ্নিকারী এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে সামিল হয়েছিলেন ২০টি দেশের প্রতিনিধি।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনের প্রথম দিন সফল। প্রথম দিনেই একাধিক দেশ তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। মমতা জানান, ইতিমধ্যেই জাপানের তরফ থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছেন । তাদের বক্তব্য, ‘‘আমরা এখানে অনেক বিনিয়োগ করেছি। আপনি আসুন ।’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সব ক্ষেত্রেই তো থাকতে হয় । কিন্তু রাজ্যের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে কোথাও যাওয়া হয় না । কখনও সাইক্লোন, কখনও বন্যা - সবকিছুতেই পাহারাদারের মতো থাকতে হয় । লন্ডন গিয়েছিলাম, বৃষ্টি হল, পালিয়ে চলে আসতে হয়েছে । অনেক আমন্ত্রণই আসে, কিন্তু সব আমন্ত্রণ আমরা রক্ষা করতে পারি না । তবে বাংলার স্বার্থে কিছু আমন্ত্রণ রক্ষা করা উচিত ।’’ এদিন মমতা বলেন, ২০ টি দেশ এবারের সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল। অতিথি দেশের তরফে আমাদের আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল। রাজ্যের জন্য বড় প্রজেক্ট আসছে।