ধর্না-অবস্থান করছেন। রাত জাগছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগও তাঁদের অনেক। তবে সেই পুলিশকর্মীদের মধ্যেই একজনের প্রাণ বাঁচালেন জুনিয়র ডাক্তাররা। স্বাস্থ্য ভবনের কাছে মধ্যরাতে কর্তব্যরত একজন মহিলা কনস্টেবল অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই মহিলার প্রাণ বাঁচালেন জুনিয়র ডাক্তাররাই। সেই ডাক্তারদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মহিলা কনস্টেবল।
বুধবার রাত তখন সাড়ে বারোটা। পুলিশের তৈরি ব্যারিকেডের আগে রাস্তায় বসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কেউ খাচ্ছিলেন। কেউ স্লোগান দিচ্ছিলেন। তখন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এক মহিলা পুলিশ কনস্টেবল। তাঁকে অসুস্থ দেখে সেখানে আসেন জুনিয়র ডাক্তার বিপ্রেশ চক্রবর্তী। তিনি বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালের ডিএম রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেন। তাঁর সঙ্গে যান কলকাতা ন্য়াশনাল মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত চিকিৎসক ফাল্গুনী ভট্টাচার্যও। ব্যাগ থেকে স্টেথোস্কোপ বের করে বিপ্রেশকে দেন তিনি।
ডাঃ বিপ্রেশ চক্রবর্তী ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, 'ওই মহিলা পুলিশকর্মীর হাঁপানি বাড়ছিল। শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। অবিলম্বে ওষুধ ও থেরাপির প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কোনও ইনহেলার ছিল না। আমি সহকর্মীদের দিকে যাই এবং ইনহেলার চাই। তিনবার ঘোষণার পর ভিড়ের মধ্যে থেকে একজন ইনহেলার দেয়। আমি আবার দৌড়ে গিয়ে ইনহেলার দিই। তারপর সেই মহিলা পুলিশকর্মী অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন।' পরে জানা যায়, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ডাঃ নিবেদিতা তাঁর ব্যাগ থেকে নিজের ইনহেলার দিয়েছিলেন।
এরপর বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে রোগীকে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সূত্রের খবর, সেই মহিলা পুলিশকর্মী এখন সুস্থ।
ডাক্তার বিপ্রেশ চক্রবর্তী ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, 'ঘটনার পর একজন সিনিয়র মহিলা পুলিশ অফিসার আমার সঙ্গে দেখা করে ধন্যবাদ জানান। তিনি আমাকে বলেন, আপনারা না থাকলে আজ হয়তো ওই পুলিশকর্মীকে বাঁচানো যেত না। আপনারা তাঁর জীবন রক্ষা করেছেন। ওই মহিলা আবেগপ্রবণ হয়ে আমার হাত ধরেন। আমি তাঁকে বলি, এটা আমাদের কাজ।'
এদিকে এই খবর সামনে আসার পর জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ নাগরিক সমাজ। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন এমনিতেই নজর কেড়েছে।