কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরানো হল নিয়োগ দুর্নীতি মামলা। এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরেই চিন্তার ভাঁজ বাড়ল ধর্নায় বসা শিক্ষকের চাকরিপ্রার্থীদের। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত ঠাণ্ডাঘরে চলে যেতে পারে, এই আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে আর হবে না। তাঁর এজলাসে যে শুনানি চলছিল, সেগুলো অন্য বিচারপতিদের শুনতে হবে। একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে যে সাক্ষাৎকার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দিয়েছেন, তার অনুবাদের কপি দেখে এবং কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে পাওয়া রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে এই নির্দেশ দেন ডিভিশন বেঞ্চ।
এক চাকরিপ্রার্থী বললেন, 'বিচারপতি গাঙ্গুলী নিয়োগ দূর্নীতি নিয়ে একের পর এক নির্দেশ দিচ্ছিলেন। বিচারব্যবস্থার ওপর আমাদের আস্থা বাড়ছিল। সেইসময় তাঁর এজলাস থেকে মামলা সরে যাওয়ায় আমরা চিন্তিত। কী হবে বুঝতে পারছি না। চাকরি কী আমরা পাব না।'
চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনকারীদের অন্যতম সুদীপ মণ্ডল বললেন, 'মূল বিষয়টা হল আমাদের নায্য চাকরি, কিন্তু সেটাই দেখছি এখন গৌণ হয়ে যাচ্ছে। যারা দুর্নীতি করেছে তাদের শাস্তির পাশাপাশি আমাদের চাকরিটাও প্রয়োজন। আমরা আর কতদিন রাস্তায় বসে থাকব।'
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, নবম -দ্বাদশ স্তরে নিয়োগ না পাওয়া প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বৈধ চাকরি প্রার্থীদের রাজ্য সরকার আইনের জটিলতার কারণ দেখিয়ে এখনো পর্যন্ত নিয়োগ করেনি। সেই সকল বৈধ চাকরি প্রার্থীরা কলকাতার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ৭৭৫ দিন ধরে ধর্ণায় বসে রয়েছেন। প্রখর রোদ, ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে আনতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ধর্ণারত যুবক-যুবতীরা।
যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল আরও বলেন, 'আমরা ধর্ণা মঞ্চে ভীষণ কষ্টে রয়েছি। আমরা নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফিরতে চাই। রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমাদের প্রতি ন্যায় বিচার করুন।'
চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে শাহিদুল্লাহ বলেন, 'বিচারপতির এজলাস থেকে মামলা সরে যাওয়ার বিষয়টা বিচারাধীন। কোনও মন্তব্য করব না। তবে অভিজিৎবাবু আমাদের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে যতটা করতে পারতেন, ততটা উদ্যোগ তিনি নেননি। দূর্নীতি কারা করল, সেটা নিয়েই তিনি বেশি তৎপরতা দেখিয়েছেন। সেটারও দরকার ছিল। তবে আমাদের চাকরি তার থেকেও বেশি প্রয়োজনীয়। তবে তাঁর এজলাসেই দূর্নীতি নিয়ে একের পর এক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। তাঁর এজলাস থেকে মামলা সরিয়ে নেওয়াটা আমাদের কাছে দূর্ভাগ্যজনক।'
আরও পড়ুন-নিয়োগ দুর্নীতির মামলা শুনতে পারবেন না বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের