চার বছরেরও বেশি সময় ধরে বহু চ্যালেঞ্জ সামলে তৈরি হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম বড় পরিকাঠামো প্রকল্প — কালীঘাট স্কাইওয়াক। সোমবার, পয়লা বৈশাখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটি উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছে কলকাতা পুরসভা (কেএমসি)।
৪৩৫ মিটার দীর্ঘ এই স্কাইওয়াকটি এসপি মুখার্জি রোড ও কালী মন্দির রোড মোড় থেকে শুরু হয়ে কালীঘাট মন্দিরের প্রধান গেটের সামনে এসে শেষ হয়েছে। স্কাইওয়াকের একটি ৩০ মিটার দীর্ঘ শাখা কালিঘাট ফায়ার ব্রিগেড মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রধান ট্রাঙ্কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে কালীঘাট থানার কাছে।
পাঁচটি প্রবেশ ও প্রস্থানপথ
স্কাইওয়াকটিতে মোট পাঁচটি প্রবেশ বা প্রস্থানপথ রয়েছে — এসপি মুখার্জি রোড থেকে, কালীঘাট মন্দিরের গেটের সামনে থেকে, সদানন্দ রোড থেকে, ফায়ার স্টেশন মোড় থেকে, এবং নতুন কালীঘাট হকার্স কর্নারের দ্বিতীয় তলা থেকে।
নতুন রূপ পেয়েছে কালী মন্দির রোড
কেএমসি জানিয়েছে, স্কাইওয়াক তৈরির পাশাপাশি নীচের রাস্তাটিও নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। একসময় কালী মন্দির রোডে নানা ধরনের অবৈধ দখল ছিল। এখন সেই অধিগ্রহণগুলি সরিয়ে ফেলা হয়েছে, এবং এসপি মুখার্জি রোড থেকে ২৫ মিটার চওড়া রাস্তা ধরে সরাসরি মন্দির পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব। পেভার ব্লক দিয়ে নতুন করে বানানো হয়েছে ফুটপাথ। ফুটপাথের প্রস্থ আগের ৬-৭ ফুট থেকে বাড়িয়ে এখন ১২ ফুট করা হয়েছে। হকারদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান বরাদ্দ রেখে পথচারীদের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ খোলা রাখা হয়েছে।
খরচ ও নির্মাণকাল
প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে এই প্রকল্প। ২০২১ সালের অক্টোবরে ১৮ মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করে কাজ শুরু হলেও প্রকল্পটি একাধিক কারণে বিলম্বিত হয়।
চ্যালেঞ্জ আর বাধা
কেএমসি-র ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, স্কাইওয়াক নির্মাণের পথে বহু কারিগরি বাধা আসে। ইটের বক্স ড্রেন, হাই-ভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইন, তিনটি জল সরবরাহের লাইন এবং একটি পুরোনো গ্যাস লাইন সরানো হয়।
তাছাড়া কাজের সময়ও নির্ধারিত ছিল। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ, গঙ্গাসাগর মেলা, দুর্গাপূজা ও কালীপুজোর সময় ভিড়ের কারণে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। এমনকি মঙ্গলবার, শনিবার এবং বর্ষাকালে সীমিত পরিসরে কাজ করার অনুমতি মেলে।