কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (কেএমসি) আদালতের বিচারপতি রাজশেখর মন্থার আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছে। আদালতের নির্দেশ ছিল, রাজ্য আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত হুক্কা বার বন্ধ করা যাবে না। ন্যাশনাল রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশনের একটি পিটিশনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা গত মাসে এই আদেশ জারি করেছিলেন যে, কলকাতা এবং বিধাননগর পুলিশ হুক্কা বার বন্ধ করতে পারে না।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, গতবছর ২ ডিসেম্বর শহরের সমস্ত হুক্কা বারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এবং নতুন লাইসেন্স দেওয়া হবে না। তিনি পুলিশের পদক্ষেপ চেয়েছিলেন। সেইমতো কলকাতা একাধিক হুক্কা বার বন্ধ করা হয়েছিল। তারপরই রেঁস্তোরা মালিকদের একাংশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। তারপরই আদালত জানায়, কলকাতা পুরসভা চাইলেই হুক্কা বার বন্ধ করতে পারে না।
বিষয়টির বিরোধিতা করে হাইকোর্টে আবেদন করেছে কলকাতা পুরসভা। তবে আবেদনটি এখনও ডিভিশন বেঞ্চে যায়নি। তাই শুনানির তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। আবেদনে কলকাতা পুরসভা অ্যাক্ট ১৯৮০-র একটি ধারা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, শহরবাসীর জন্য বিরক্তিজনক যেকোনও কিছুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি রয়েছে নাগরিক সংস্থা পুরসভার। আর হুক্কা বারগুলিও মানুষের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কলকাতা পুরসভার আইনের ৫১৭ এবং ৫১৭এ ধারাগুলিতেও ওই অনুমতি রয়েছে।
৫১৭ শহরের মধ্যে কোনও কাজে বাসিন্দাদের কষ্ট হলে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে পারে কলকাতা পুরসভা। ধারা ৫১৭এ মেয়র পারিষদকে সমস্যা মেটানোর ক্ষমতা দেয়। কিন্তু বিচারপতি মান্থার নির্দেশের পর শহরে ফের হুক্কাবার চালু হয়েছে।
লালবাজারের সূত্রে খবর, চলতি বছর জানুয়ারি মাসে হাইকোর্টের নির্দেশের পর থেকে হুক্কা বারগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ডিসেম্বরে মেয়রের ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ পরে, পুরসভা কিছু সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঘোষণা করে যে, হুক্কা বারগুলিতে জারি করা সমস্ত লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এর পরেই বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন তার এলাকায় হুক্কা বারগুলির জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
হুক্কা বার নিয়ে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করার সময়, মেয়র ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেছিলেন যে, হুক্কা বারগুলিতে মাদক সেবনের একাধিক অভিযোগের কারণে ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে ন্যাশনাল রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশন আদালতে যুক্তি দেখিয়েছে যে, হুক্কা বার বন্ধ করার পুলিশের সিদ্ধান্ত সিগারেট এবং অন্যান্য তামাক পণ্য আইনের পরিপন্থী, যা একটি কেন্দ্রীয় আইন।