কলকাতায় একধাক্কায় বাসের সংখ্যা কমতে পারে। আর তার ফলে তীব্র ভোগান্তির মুখে পড়তে পারেন নিত্যযাত্রীরা। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো, ১৫ বছর পার করা বাস আর রাস্তায় নামানো যাবে না। এদিকে নভেম্বরের শেষেই শহরের বহু বাস এই ডেডলাইন ছুঁতে চলেছে। ফলে এক ধাক্কায় এই মাসে ৭৫০ বাস উঠে যেতে পারে তিলোত্তমার রাস্তা থেকে। এর ফলে বেশ কিছু রুটে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এমনিতেই শহরের বেশ কিছু রুটে যাত্রী সংখ্যার তুলনায় বাস কম থাকে। গত অগাস্ট থেকেই বাতিলের নির্দেশের প্রভাবে কমছে বাসের সংখ্যা। অফিস টাইমে ভিড় বাসে উঠলেই বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যায়। ঘেমেনেয়ে নাজেহাল হয়ে অফিস যান নিত্যযাত্রীরা। এসি বাস থাকলেও, সকলের পক্ষে রোজ সেই ভাড়া দেওয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া প্রাইভেট বাস, মিনিবাসের তুলনায় সেগুলির সংখ্যাও কম। ফলে প্রাইভেট, মিনিবাসই ভরসা। কিন্তু সেই বাসের সংখ্যাও এবার কমতে চলেছে।
১৫ বছরের পুরনো হলেই...
পরিবহন দফতরের হিসাব বলছে, নভেম্বরেই ১৫ বছর পূরণ করতে চলেছে প্রায় ৭৫০টি বাস। ইটিভি ভারতের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সব মিলিয়ে বছর শেষে কলকাতায় প্রায় ১,৫০০ বাস বন্ধ হতে চলেছে।
এদিকে বাস সংগঠনগুলির কথায়, বাসের ব্যবসায় ট্রাক-লরি, পণ্যবাহী গাড়ির তুলনায় লাভ কম, ঝক্কি বেশি। তাই এই ব্যবসায় নতুন করে যুবসমাজ, নয়া ব্যবসায়ীরা আসছেন না। আর সেই কারণেই এই বসে যাওয়া বাসের শূন্য়স্থান পূরণের সম্ভাবনাও কমে আসছে।
এর পাশাপাশি গত ৭ বছর ধরে রাজ্যে বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়েনি। মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এমন পরিস্থিতিতে বাস চালানোই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে মালিকদের।
আপাতত বাস মালিক সংগঠনগুলির দাবি, হাইকোর্টের নির্দেশে ১৫ বছর বলা হলেও, এর মধ্যে কোভিডের কারণে ২ বছর সেভাবে বাস চলেনি। করোনার দুই বছরটা মুকুব করে আরও ২ বছর বাস চালাতে দেওয়া হোক, দাবি তাঁদের। এই বিষয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন।
ক্রমেই কমছে বাসের সংখ্যা
পরিবহণ দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনার আগে কলকাতায় বেসরকারি বাস ছিল ৪,৮৪০টি। মিনিবাস ছিল ২,০৬৪টি।
বর্তমানে শহরে বেসরকারি বাসের সংখ্যা ৩,৬১৫টি। মিনিবাসের সংখ্যা ১,৪৯৮টি।
এরপর আরও বাস বসে গেলে এবং নতুন বাস রাস্তায় না নামলে পরিস্থিতি কী হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।