আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুন হওয়া এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের বাবা-মা এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে তাঁদের মেয়েকে হত্যা করার জন্য কেউ নির্দেশ দিয়েছিল। উল্লেখ্য, সঞ্জয় রায় কলকাতা পুলিশের একজন সিভিক ভলান্টিয়ার ১০ আগস্ট গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের আগে, হাসপাতালের সেমিনার হলে ওই শিক্ষানবিশ ডাক্তারের অর্ধনগ্ন দেহ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায় যে তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে।
'আজ তক বাংলা'র সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে, মৃত চিকিৎসকের মা দাবি করেন, তাঁর মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে কারণ সে "কিছু অন্ধকার রহস্য" সম্পর্কে জেনে গিয়েছিল। তিনি বলেন, "আমাদের মেয়েকে হত্যা করার জন্য কেউ সঞ্জয়কে মোতায়েন করেছিল। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের মেয়ের সম্পর্কে ছড়ানো মিথ্যা তথ্য সহ্য করতে পারছি না। আমার মেয়ে নিশ্চয়ই চিৎকার করেছিল যখন তাঁর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটছিল।"
মা আরও অভিযোগ করেন, ঘটনার পর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বা ক্ষমা চাননি। তিনি জানান, মেয়ের শেষ কথা ছিল, "আমার খাবার এসে গেছে," এবং ওটাই তাঁর শেষ কথা।
পরিবারের মতে, তাঁদের মেয়ে তার বাবার জন্য ওষুধের অর্ডার দিতে চেয়েছিল এবং যেদিন তাঁকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়, সেদিন রাতে খাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। মেয়ের মরদেহ দেখার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে বাধ্য হওয়ার বিষয়ে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে তিনি বলেন, "তারা কিছু লুকিয়ে রেখেছিল এবং আমাদের সন্তানের লাশ দেখায়নি। কেন তাদের চার ঘণ্টা সময় লাগল আমাদের মেয়ের মুখ দেখাতে? তারা কি লুকাচ্ছিল?"
খুন হয়ে যাওয়া চিকিৎসকের মা আরও জানান, তাঁদের মেয়ে এমডি শেষ করার পর ডক্টরেট অফ মেডিসিন (ডিএম) করার পরিকল্পনা করেছিল এবং সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতির জন্য বইও কিনেছিল। তিনি বলেন, "৩৬ ঘণ্টা ডিউটি করার পরেও সে পড়াশোনা করত এবং আরও চারটি অনলাইন কোর্স করছিল। কোভিডের সময় সে টানা চার দিন একটি পৌর হাসপাতালে ডিউটিতে থাকত।"
পরিবারের দাবি অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাঁদের বাড়িতে গিয়ে ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেন এবং বলেন যে তিনি পরিবারের পাশে থাকবেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন ও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে, যেখানে চিকিৎসকসহ আন্দোলনকারীরা দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন।