Advertisement

EXCLUSIVE: চেম্বারের নেমপ্লেটে এখনও অক্ষত 'নাম', কেমন রোগী দেখতেন আরজি করের সেই 'ডাক্তার সাহেব'?

'দু'বছর ধরে এখানে প্র্যাকটিস করছিলেন। খবর শোনার পর থেকে আমরা খুবই মর্মাহত। ওঁর দ্বারা প্রচুর মানুষ উপকার পেতেন। অনেক রোগী হত। উনি আমাদের সম্পদের মতো ছিলেন। ঘটনা শোনার পর থেকেই সবাই এসে দুঃখ প্রকাশ করছে। অনের রোগী এসে কাঁদছেন। আমাদের এলাকার মেয়ে। আমরা চাই সঠিক বিচার হোক।' 

এখনও চেম্বারের সামনে লেখা খুন হয়ে যাওয়া চিকিৎসকের নাম। গ্রাফিক-শুভঙ্কর মিত্র
সুকমল শীল
  • কলকাতা,
  • 21 Aug 2024,
  • अपडेटेड 3:13 PM IST
  • আরজি কর হাসপাতালের এই মেধাবী ও সম্ভাবনাময়ী তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যু শুধু তাঁর পরিবারের জন্য নয়, বরং পুরো এলাকার জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
  • তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ এলাকার মানুষরা সঠিক বিচারের জন্য এখনও অপেক্ষায়।

'খুব ভালো একজন চিকিৎসক ছিলেন, ধৈর্য ধরে রোগী দেখতেন', এলাকার প্রায় সকলেই বলছেন একথা। তাঁদের আক্ষেপ, এলাকার সম্পদকে হারালেন তাঁরা। তিনি এলাকার কয়েকটি চেম্বারে সপ্তাহে দু'তিনদিন রোগী দেখতেন। ফিজ নিতেন নামমাত্র। উজ্জ্বল সম্ভাবনাময়ী ওই তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুতে শোকের পাশাপাশি চাপা রাগ গোটা এলাকায়। এখনও সেখানকার একটি নামী মেডিক্যাল হলে চিকিৎসকদের নামের তালিকায় রয়েছে তাঁর নাম। তিনি কাছেই আরও একটি চেম্বারে বসতেন। সেখানকার মালিক অবশ্য তাঁর নাম সাদা কাগজ দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। কেমন রোগী দেখতেন খুন হয়ে যাওয়া চিকিৎসক? জানতে তাঁর এলাকায় গিয়েছিল 'বাংলা ডট আজতক ডট ইন।'

একজন চেম্বারের মালিক বললেন, 'আমার এখানে চেম্বারে বসতেন অনেকদিন ধরেই। পড়াশোনার চাপের জন্য ফার্স্ট ইয়ারটা বসেননি। পরে নিয়মিত রোগী দেখতেন। রোজ বিকেল ৪টে থেকে রোগী দেখতেন। ওঁর ব্যবহার ও চিকিৎসা খুবই ভালো ছিল। বহু রোগী দেখাতে আসতেন। খবর পেয়ে আমরা হতাশ। আমরা ভাবতেই পারছি না। মাঝেমধ্যে আমার সঙ্গে কথা হত। আমার খুবই খারাপ লেগেছে। সবাই যেমন জাস্টিস চায়, আমরাও জাস্টিস চাইছি। অপরাধী শাস্তি পাক। ডাক্তারদের তালিকায় ওঁর নামটা সাদা কাগজ দিয়ে ঢেকে দিয়েছি। দেখে আমার কষ্ট হচ্ছিল।'

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসেবে প্র্যাকটিস করতেন আরজি করে নির্মমভাবে খুন হয়ে যাওয়া চিকিৎসক। স্পষ্ট হাতের লেখার জন্য কী লিখেছেন তা বোঝা যেত তাঁর প্রেসক্রিপশনে। গাছপালা এবং পশুপাখির প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল। এলাকার পথ কুকুরদের নিয়মিত খাওয়াতেন। বাড়িতে দুর্গাপুজো হত। এবছরের পুজোর প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলে তিনি। কেনাকাটাও হয়ে গিয়েছিল অনেক কিছু। বাড়ির বড়রা আদর করে ডাকতেন, 'ডাক্তার সাহেব'। চিকিৎসকের কাকুও তাঁকে ভালোবেসে 'ডাক্তার সাহেব' ডাকতেন বলে জানিয়েছেন। রোগীরা তাঁর ব্যবহারে মুগ্ধ ছিলেন, কারণ তিনি অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে তাঁদের কথা শুনতেন এবং সঠিক পরামর্শ দিতেন।

Advertisement

অন্য একটি মেডিক্যাল হলের মালিক বললেন, 'দু'বছর ধরে এখানে প্র্যাকটিস করছিলেন। খবর শোনার পর থেকে আমরা খুবই মর্মাহত। ওঁর দ্বারা প্রচুর মানুষ উপকার পেতেন। অনেক রোগী হত। উনি আমাদের সম্পদের মতো ছিলেন। ঘটনা শোনার পর থেকেই সবাই এসে দুঃখ প্রকাশ করছে। অনের রোগী এসে কাঁদছেন। আমাদের এলাকার মেয়ে। আমরা চাই সঠিক বিচার হোক।' 

আরজি কর হাসপাতালের এই মেধাবী ও সম্ভাবনাময়ী তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যু শুধু তাঁর পরিবারের জন্য নয়, বরং পুরো এলাকার জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ এলাকার মানুষরা সঠিক বিচারের জন্য এখনও অপেক্ষায়। তাঁরা চান, যে নৃশংসভাবে এই মেয়েকে জীবন থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, সেই অপরাধীদের যেন কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হয়। মানুষের মনে ক্ষোভের আগুন এখনও জ্বলছে, আর সবার মুখে একটাই কথা—"জাস্টিস চাই।"
 

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement