কসবা ল কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় বিস্ফোরক দাবি করলেন অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রর আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার আদালতে পেশ করার পর তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, 'মনোজিৎকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে। ধর্ষণের যদি ঘটনাই ঘটে, তাহলে অভিযুক্তের ঘাড়ে লাভ বাইট থাকবে কীভাবে?' এই বক্তব্য সামনে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ওই আইনজীবীর আরও দাবি, 'অভিযুক্ত মানেই অপরাধী নয়। আমার মক্কেল কোনও অপরাধ করেনি। তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলায় টেনে আনা হয়েছে।' যদিও তিনি জানান, বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় সমস্ত তথ্য এখন প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
রাজু গঙ্গোপাধ্যায় সিসিটিভি ফুটেজ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তাঁর দাবি, 'সিসিটিভিতে যে অপহরণের প্রমাণ বলা হচ্ছে, সেটাও সত্য নয়।' তিনি বোঝাতে চান, ঘটনাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এই বক্তব্য সামনে আসার পরেই শুরু হয়েছে প্রবল জনরোষ। সমাজের একাংশ এবং মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, 'এই ধরনের মন্তব্য একজন ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর প্রতি চূড়ান্ত অবমাননাকর। তার মানসিক যন্ত্রণা, সামাজিক লজ্জা ও নিরাপত্তাহীনতাকে আরও গভীর করে তুলছে।'
অনেকে বলছেন, অভিযুক্তের ঘাড়ে কোনো চিহ্ন থাকলে, তার ভিত্তিতে ধর্ষণের সত্যতা নস্যাৎ করা চলে না। এটি ভিকটিম শেমিং এর এক চরম উদাহরণ।
অভিযুক্ত মনোজিতের পরিবারও তাঁর পক্ষ নিয়েছে। তাঁদের কথায়, 'আমাদের ছেলেকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার করা হচ্ছে। কলেজে সে জনপ্রিয় ছিল, তাই কেউ মিথ্যে অভিযোগ এনেছে।'
২৫ জুন কসবা ল কলেজে এক ছাত্রীকে ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে মনোজিৎ মিশ্র, জইব আহমেদ এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার চারদিনের হেফাজত শেষে তাদের আবার আদালতে তোলা হয়। পুলিশ ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করেছে। আদালত তিনজনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ বাড়িয়ে ৮ জুলাই পর্যন্ত করেছে।