
কলকাতা মেট্রো সম্প্রসারণ প্রকল্পে দীর্ঘদিনের জটের জন্য সরাসরি রাজ্য সরকারের ওপর দায় চাপালেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বুধবার সংসদে দেওয়া এক লিখিত জবাবে তিনি জানান, 'রাজ্যের বারবার অসহযোগিতা এবং বিভিন্ন অনুমোদন আটকে রাখার কারণেই বহু গুরুত্বপূর্ণ করিডোরে কাজ থমকে আছে।'
তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির প্রশ্ন, কলকাতা ও শহরতলিতে মেট্রো সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ও সময়সীমা নিয়ে কেন্দ্রের আপডেট জানতে চেয়েছিলেন। সাংসদ জানতে চেয়েছিলেন, ১৪ কিলোমিটার জোকা-এসপ্ল্যানেড লাইনের মাঝেরহাট থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত প্রায় ৬.২৬ কিমি কাজ এখনও অসম্পূর্ণ।
রেলমন্ত্রীর দাবি, এসপ্ল্যানেডের কাছে ড. বি.সি. রায় মার্কেটের ৫২৮টি দোকান এখনও সরানো হয়নি। রেল দোকানগুলির অস্থায়ী স্থানান্তরের ব্যবস্থা করলেও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যের কারণে ৩.৫ বছর ধরে ঝুলে আছে। খিদিররপুর স্টেশনের জমি আটকে ছিল পাঁচ বছর। এই জমি কলকাতা সশস্ত্র পুলিশের। ৮৩৭ বর্গমিটার স্থায়ী এবং ১,৭০২ বর্গমিটার অস্থায়ী জমি। প্রস্তাব পাঠানো হয় ২০২০ সালের আগস্টে। অনুমোদন মেলে পাঁচ বছরেরও বেশি পরে, ২০২৫ সালের জুলাইয়ে।
নিউ গড়িয়া-এয়ারপোর্ট করিডোর-চিংড়িঘাটা সেকশনে ১০ মাস ধরে আটকে এনওসি। ২২.২ কিমি এই অংশে রেলওয়ে ডাইভারশন রোড তৈরি করলেও এনওসির জন্য ১০ মাস ধরে অপেক্ষা। রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুলিশ, কারও কাছ থেকেই চূড়ান্ত অনুমোদন নেই।
নোয়াপাড়া-বারাসত লাইনে জমি না মেলায় কাজ স্থগিত। ২৩,০০০ বর্গমিটার জমি অধিগ্রহণ আটকে। ১,২৭৭টি ঝুপড়ি এবং ৭৬৪টি দোকান সরানো হয়নি।
নিউ ব্যারাকপুর-বারাসতের ৭.৫ কিমি অংশে নির্মাণ থমকে। সবচেয়ে বেশি দেরি বরানগর-ব্যারাকপুর-দক্ষিণেশ্বর রুটে। ১৪.৫ কিমির মধ্যে ১২.৫ কিমি কাজ ১৩ বছর ধরে বন্ধ। ২০১১ সালে রাজ্য পাইপলাইন সরাবে বলে চুক্তি হলেও। এনওসি এখনও মেলেনি
তবে কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ২০০৯-২০১১ সালে রেলমন্ত্রী হিসেবে তিনি-ই মেট্রো প্রকল্পগুলির নীলনকশা তৈরি করেছিলেন। জমি, রাস্তা, পুনর্বাসন-সবই রাজ্য দিয়েছে। কেন্দ্র বরং প্রকল্পগুলিকে ধীরগতিতে ঠেলে দিয়েছে।