কখনও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, কখনও আবার ব্যস্ত সময়ে বিভ্রাট। কলকাতার লাইফলাইন মেট্রোর যাত্রা এখন যেন নিত্যযাত্রীদের কাছে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। ৩ নয়া রুট চালু হতেই পুরনো ব্লু লাইনের পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ অবশ্য গুরুতর সমস্যার কথা মানতে নারাজই। এবার পুজোর মুখে আরও খারাপ খবর শোনাল তারা। এবার থেকে ৩২টি ট্রেন দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম যাওয়ার বদলে মহানায়ক উত্তম কুমার অর্থাৎ টালিগঞ্জ স্টেশনেই শেষ হয়ে যাবে। যাত্রীদের অবশ্য বক্তব্য, প্রতিদিনই প্রায় বেশ কিছু মেট্রো প্রান্তিক স্টেশন পর্যন্ত যাচ্ছে না কোনও আগাম অফিসিয়াল ঘোষণা ছাড়াই। ফলে পুজোর ভিড়ে দুর্ভোগ যে পোয়াতে হবেই, তা এবার আরও স্পষ্ট হল।
কখন কেমন চলবে মেট্রো?
প্রতিদিন এই মুহূর্তে ব্লু লাইনে অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত ২৭২টি ট্রেন চলাচল করে। এবার থেকে তার মধ্যে ৩২টি ট্রেন টালিগঞ্জ পর্যন্ত যাবে। পাশাপাশি এবার থেকে ব্যস্ত সময়ে দু'টি ট্রেনের মধ্যে ৫ মিনিটের ব্যবধান এবং অন্য সময়ে ৭ মিনিটের ব্যবধান থাকবে বলেও মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে। সমস্যা যে একটা রয়েছে তা একপ্রকার স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। এবং দ্রুত সে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে তারা।
কী কারণে এই বদল?
মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, মহানায়ক উত্তম কুমার স্টেশনের শেড সারানো, শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনে রেক রিভার্সাল সুবিধা তৈরি করার মতো বিষয়গুলি দ্রুতগতিতে করার লক্ষ্যেই এমন পদক্ষেপ। এদিকে বন্ধ রয়েছে কবি সুভাষ স্টেশনও। ফলে প্রচুর সংখ্যক নিত্যযাত্রী এমনিতেই সমস্যায় পড়েছেন। তার উপর বর্তমান প্রান্তিক স্টেশন শহিদ ক্ষুদিরামেও সব মেট্রো না গেলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন নিত্যযাত্রীদের অধিকাংশ।
পুজোর মুখে আরও বাড়বে দুর্ভোগ?
বর্তমানে ইস্ট-ওয়েস্ট, উত্তর-দক্ষিণ করিডর মিলিয়ে রয়েছে মাত্র ২৮টি রেক। যা দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। আরও বেশ কিছু ডালিয়ান কোচ বুধবার কলকাতা বন্দরে এসেছে। কিন্তু সেগুলির ট্রায়াল রান এবং সুরক্ষার ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত নামানো যাবে না। ফলে পুজোর মুখে মেট্রোর রেকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কোনও আশা নেই।
পুজোর আর বাকি মাত্র ক'টা দিন। এই অবস্থায় নিত্যদিনই কেনাকাটা করতে বেরোন অসংখ্য মানুষ। তার মধ্যে রয়েছে অফিস ফিরতি যাত্রীদের ভিড়। সব মিলিয়ে ভাদ্র মাসের পচা গরমে দিনের শেষে মেট্রোর ভিড়ে নাভিঃশ্বাস উঠে যাচ্ছে সকলের। শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত পরিষেবা আরও কমে যাওয়ায়, নিত্যযাত্রীদের আশঙ্কা, পুজোয় এই অবস্থা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।