ঠান্ডা কমলে ডেঙ্গির প্রকোপ কমে যায়, এমনটাই বলে থাকেন পতঙ্গবিদরা। কিন্তু এবছর নভেম্বরের শেষ নাগাদ ঠান্ডা কমে গেলেও ডেঙ্গির প্রকোপ কমেনি। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, আবহাওয়ার পরিস্থিতি এখনও মশার বংশবৃদ্ধির জন্য উপযোগী। এবং এখনও ডেঙ্গি আক্রান্তের ঘটনা নথিভুক্ত হচ্ছে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ডেঙ্গি সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। যদিও এখন সেই সংখ্যা কমেছে।
১৯ নভেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে কলকাতা পুর এলাকায় ৪৫০টিরও বেশি ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর মিলেছে। কলকাতা পুরসভার এক উর্ধ্বতন অফিসার জানিয়েছেন। পুর-আধিকারিকরা জানাচ্ছেন যে, ডেঙ্গি সংক্রমণ সাধারণত অক্টোবরে শীর্ষে পৌঁছোয় এবং নভেম্বরে সংখ্যা কমতে শুরু করে। করোনার পর চলতি বছর নভেম্বর মাসে কলকাতায় ডেঙ্গির সংখ্যা শীর্ষে পৌঁছেছিল।
ডাক্তাররা জানিয়েছেন যে তাঁরা এখনও ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা করছেন এবং তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। মুকুন্দপুরের আমরি হাসপাতালে প্রায় ৫ জন রোগী ডেঙ্গির চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখনও দুই দিন বা তার বেশি জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডেঙ্গি পরীক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছেন। যেসব রোগী সর্দি-কাশিতে ভুগছেন না, কিন্তু শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা ও জ্বর আছে তাদের ডেঙ্গি পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, বৃষ্টির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। নভেম্বরের শেষে আবার বৃষ্টি হলে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমতে পারে। বৃষ্টির প্রভাব এক পাক্ষিক পরে শুরু হয়। মশা ডিম পাড়বে এবং ভাইরাসটি নতুন মশার ভিতরে প্রবেশ করবে। ভাইরাস বহনকারী মশা একবার মানুষকে কামড়ালে এর লক্ষণ দেখা দিতে কয়েক দিন সময় লাগে। এই সব প্রায় এক পাক্ষিক সময় লাগে। যেকারণে বৃষ্টির কিছুদিন পরেই ডেঙ্গি বেড়ে যায়। ডেঙ্গি ভাইরাসের প্রাথমিক ট্রান্সমিটার এডিস ইজিপ্টি মশা পরিস্কার জলে ডিম পাড়ে। প্রাপ্তবয়স্ক মশার ডিম পাড়ার পর থেকে এক সপ্তাহ সময় লাগে।
আদ্রতা এবং দিনের তাপমাত্রা এখনও মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত। মশার বংশবৃদ্ধির সম্ভাব্য সব উৎস ধ্বংস করার অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে বলে জানাচ্ছেন পুর আধিকারিকরা। তাঁদের মতে, ডিসেম্বর মাসেও ডেঙ্গি সংক্রমণ হবে, যদিও সংখ্যায় অনেক কম।