কলকাতা পুরসভার একশো দিনের প্রকল্পের কর্মীরা দুমাসেরও বেশি সময় ধরে তাঁদের বেতন পাননি। শনিবার পুরসভার মাসিক অধিবেশনে এই বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শ্রমিকদের কাছে তিনি ক্ষমা চান। তিনি জানান, রাজ্যের অর্থ বিভাগ থেকে বিলম্বে তহবিল ছাড়ের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে তিন দিনের মধ্যেই বকেয়া বেতন কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে বলে আশ্বাস দেন মেয়র।
বেতন আটকে থাকার কারণ
পুরসভার ১০০ দিনের কর্মীরা মূলত পশ্চিমবঙ্গ শহুরে কর্মসংস্থান প্রকল্পের অধীনে নিযুক্ত, যা জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি প্রকল্পের (NREGA) ধাঁচে গড়ে তোলা হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে নিযুক্ত শ্রমিকরা শহরের বিভিন্ন পরিষেবায় নিয়োজিত থাকেন, যেমন:
ড্রেন ও নর্দমা পরিষ্কার করা
রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া
প্রতিদিনের বর্জ্য সংগ্রহ
জলাশয় পরিষ্কার
স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য কাজ করা
তবে, অর্থ বিভাগের তরফে তহবিল আটকে রাখার কারণে তাঁদের বেতন আটকে গিয়েছে। ফিরহাদ জানান, কিছু পুরসভা নির্দিষ্ট প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থের ব্যবহার শংসাপত্র জমা দেয়নি। এই কারণে অর্থ ছাড়ে বিলম্ব হয়েছে।
এসক্রো তহবিলের প্রস্তাব বাতিল
বেতন বিলম্বের সমস্যা মেটাতে মেয়র এসক্রো তহবিল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যাতে KMC-র অর্থ বিভাগ থেকে অর্থ ছাড়ে দেরি হলেও শ্রমিকদের বেতন দিতে কোনও সমস্যা না হয়। তবে অর্থ বিভাগ এই ব্যবস্থা অনুমোদন করেনি বলে হাকিম জানান।
বিরোধীদের প্রশ্ন এবং দাবিদাওয়া
অধিবেশনে বিজেপি এবং সিপিএমের দুই বিরোধী কাউন্সিলর বেতন বিলম্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সিপিএম কাউন্সিলর নন্দিতা রায় জানান, শ্রমিকরা প্রতি মাসে নির্দিষ্ট তারিখে বেতন পান না, যা অমানবিক। তিনি মাসের নির্দিষ্ট দিনে বেতন প্রদানের ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান।
হাওড়ায় একই পরিস্থিতি
প্রায় এক সপ্তাহ আগে হাওড়া পৌরসভা অধীনে কর্মরত ১০০ দিনের প্রকল্পের শ্রমিকরাও বেতন না পাওয়ায় বিক্ষোভ দেখান। তবে পরে তাঁদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া হয়।
মেয়রের আশ্বাস
ফিরহাদ হাকিম জানান, অর্থ বিভাগ তহবিল ছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তিন দিনের মধ্যেই শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে। পাশাপাশি, তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে ভবিষ্যতে শ্রমিকদের বেতন নিয়ে আর কোনও সমস্যা হবে না।