পার্ক স্ট্রিট থানায় এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল। অভিযুক্ত সাব-ইনস্পেক্টর। পুলিশ সূত্রের খবর, নির্যাতিতা মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার ও ওই সাব-ইনস্পেক্টর পার্ক স্ট্রিট থানায় কর্মরত। অভিযুক্ত সাব-ইনস্পেক্টরকে ক্লোজ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অভিষেক রায়ের বিরুদ্ধে। ২০০৯ ব্যাচের সাব-ইনস্পেক্টর তিনি। ভারতীয় দণ্ড সংহিতার ৭৪ ধারায় দায়ের হয়েছে এফআইআর। বাংলা ডট আজতক ডট ইন-কে ডিসিপি প্রিয়ব্রত রায় জানান,'অভিযুক্ত অফিসারকে ডিউটি থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত'।
ঘটনাটি ঘটেছে ৪ অক্টোবর রাতে। সে দিন ঠিক কী ঘটেছিল? নির্যাতিতা জানান,'আমি ডিউটিতে ছিলাম। একজন গার্ডকে দিয়ে নিজের রেস্ট রুমে ডেকে পাঠান সাব-ইন্সপেক্টর। পার্ক স্ট্রিট থানার চারতলায় ওই রেস্ট রুম। তখন রাত ১টা ১০ বাজছিল। রেস্ট রুমে যাওয়ার পর উনি আমায় পুজোর জন্য সালোয়ার কামিজ উপহার হিসেবে দেন। উপহার নেওয়ার সময় আমাকে খুব বাজেভাবে স্পর্শ করছিলেন। আমার গোপনাঙ্গেও হাত দেন। আমি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে আমার সঙ্গে জোরজবরদস্তি করেন। পুরো মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন'।
নির্যাতিতা আরও জানান,'আমি ঘর থেকে বেরিয়ে এসে গোটা ঘটনাটি ডিউটি অফিসার রণবীর দাসকে বলি। এই গুরুতর অভিযোগ শুনেও উনি ব্যবস্থা নেননি। উল্টে আমায় বিষয়টি ভুলে যেতে বলেন। কিছুক্ষণ পর আমি নিজের ছোট ভাইকে থানায় ডাকি। ১৫-২০ মিনিটে ও চলে আসে। আমরা জেনারেল ডায়েরি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ডিউটি অফিসার চাননি। বরং বিষয়টি থানার মধ্যেই যাতে মিটমাট হয়ে যায় সেই চেষ্টা করেছিলেন'।
তারপর নির্যাতিতা ফোন করেন তাঁর কাকাকে। তিনিই নির্যাতিতাকে নিয়ে যান ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যালে। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন অভিযুক্ত সাব-ইনস্পেক্টর। মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার বলেন,'২৫ সেপ্টেম্বর রাত দেড়টা নাগাদ মদ্যপ অবস্থায় কম্পিউটার রুমে ঢুকে পড়েছিলেন ওই অফিসার। কিন্তু পরিবারের কথা ভেবে বিষয়টি আমল দিইনি'।
ঘটনা কীভাবে জানাজানি হল? রাজ্যের ডিএসপি (দক্ষিণ) এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকে লিখিত অভিযোগ করেন নির্যাতিতা। তারপরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। সূত্রের খবর, সাব ইন্সপেক্টর অভিষেক রায়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তারপর শুরু হয়েছে তদন্ত। পার্ক স্ট্রিট থানার সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আতসকাঁচের তলায় ডিউটি অফিসার রণবীর দাসের ভূমিকাও।