কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার ১০ দিন পর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতিতার শরীরে মোট ১৪টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মাথা, উভয় গাল, ঠোঁট (ওপরের এবং ভেতরের), নাক, ডান চোয়াল, চিবুক, ঘাড় (এপিগ্লোটিসের কাছাকাছি এবং ওপরে), বাঁ হাত, কাঁধ, হাঁটু, গোড়ালি এবং গোপনাঙ্গে আঘাত পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফুসফুসেও রক্তক্ষরণ দেখা গেছে। ভিসেরা, রক্ত ও অন্যান্য সংগৃহীত নমুনা বিশ্লেষণের জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, চিকিৎসকের শরীর ও গোপনাঙ্গে সব আঘাতই ছিল মৃত্যুর আগে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে মেডিকেল অফিসার বলেছেন, দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করা হয়েছে। তাঁর গোপনাঙ্গে জোরপূর্বক প্রবেশের মেডিকেল প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা ধর্ষণেরই ইঙ্গিত করছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নখের আঁচড় এবং কামড়ের চিহ্নও পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গোপনাঙ্গে পাওয়া দেহরস এবং ক্ষত থেকে লালারসের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে অপরাধী চিহ্নিত করা সম্ভব।
ঘটনার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টও স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা গ্রহণ করেছে। আগামীকাল, মঙ্গলবার ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করবে। দেশব্যাপী প্রতিবাদ এবং চিকিৎসকদের ধর্মঘটের পর সুপ্রিম কোর্টে এই পিটিশন দাখিল করা হয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দিল্লি AIIMS-এর চিকিৎসকরা তাদের ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন। তাঁরা সকাল ১১টা থেকে ৩৬ ধরনের বিনামূল্যে ঐচ্ছিক OPD পরিষেবা প্রদান করবেন। এছাড়া, পদ্ম পুরস্কারপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের একটি দল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, চিকিৎসা পেশাদারদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। এই পদক্ষেপগুলির মাধ্যমে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা এবং ন্যায়ের নিশ্চয়তা আশা করা হচ্ছে।