একটা সিগারেট খাওয়া যতটা ক্ষতিকর, শিঙাড়া-জিলিপিও তার চেয়ে বেশি বই কম নয়। একথা বলছে খোদ কেন্দ্র সরকার। আপনার প্রিয় মুচমুচে শিঙাড়া কিংবা চিনির শিরায় ডোবানো জিলিপি তামাকের মতোই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে শরীরের জন্য। আর তাই সচেতনতার লক্ষ্যে বিশেষ পদক্ষেপ করতে চলেছে প্রশাসন। স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য এবার প্রতিটি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির ক্যাফেটেরিয়াতে ঝোলানো থাকবে 'ওয়ার্নিং বোর্ড'। সেই বোর্ডে উল্লেখ থাকবে, ১টা শিঙাড়া, জিলিপি বা জিভে জল আনা পকোড়া-বড়া পাওতে কত পরিমাণ ক্যালরি, ফ্যাট এবং সুগার থাকে। কিন্তু এই নিয়ে তীব্র আপত্তি তুললেন কুণাল ঘোষ। জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রের এই ফতোয়া বাংলায় চলবে না।
কী আপত্তি কুণালের?
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ মঙ্গলবার একটি এক্স পোস্ট করে লেখেন, 'শিঙাড়া, জিলিপি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ফতোয়া মানবে না রাজ্য সরকার। মমতার রাজ্য মনে করে কে কী খাবেন, স্বাধীনতা তাঁর। খাদ্যের গুণমান ঠিক থাকলে খাদ্যবস্তুর উপর কোনও বিধিনিষেধ বা হস্তক্ষেপ উচিত নয়। বাংলায় এসব হবে না।'
বৃষ্টিভেজা দিনে চা-এর সঙ্গে গরম শিঙাড়ায় কামড় বসাতে কে না ভালবাসে। বাঙালির কাছে রসে চোবানো জিলিপিও ভীষণ ফেভারিট। ফলে স্বাস্থ্যের দোহাই দিয়ে খাদ্যরসিক বাঙালিকে শিঙাড়া-জিলিপি থেকে দূরে রাখা কিছুটা কঠিন তো বটেই। তবে কুণাল ঘোষ মনে করছেন এটা কেন্দ্রের ফতোয়া। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে খাবারের পছন্দ-অপছন্দ। ফলে বাংলায় এসব মানা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন কুণাল।
কেন এই পদক্ষেপ কেন্দ্রের?
এদিকে, AIIMS নাগপুর ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই নয়া নিয়মটি নিজেদের ক্যাম্পাসে চালু করতে চলেছে। খাবারগুলির বিক্রির উপর কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। তবে শিঙাড়া-জিলিপির মতো মুখরোচক খাবার তামাকের মতোই শরীরের সমান ক্ষতি করছে, সেই বিষয় সতর্ক করা হবে। মূলত ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন আর হার্টের অসুখের মোত রোগ রুখতেই এই সচেতনতা।
ভারতীয়দের মধ্যে ক্রমেই বাড়ছে ওবেসিটির সমস্যা। বর্তমানে পাঁচ জনের মধ্যে একজন ওবেসিটির শিকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এই ভাবে চলতে চাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৪৪.৯ কোটি ভারতীয় ওবেসিটির বা ওভারওয়েটের শিকার হবেন।
কার্ডিওলজি সোশ্যাইটি অফ ইন্ডিয়ার নাগপুরের শাখার প্রফেসর ড. ওমর আমলে বলেন, 'সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে যেমন সতর্কতা থাকে, এই সতর্কতাও অনেকটা সেরকমই। সুগার এবং ফ্যাটই এখন নয়া তামাক। মানুষের জানার অধিকার রয়েছে তাঁরা কী খাচ্ছেন।' প্রবীণ ডায়াবেটোলজিস্ট ডা. সুনীল গুপ্তা বলেন, 'এটা খাবার বন্ধ করে দেওয়ার বিষয় নয়। কিন্তু মানুষ যদি বুঝতে পারেন, একটি গোলাপজামে ৫ চামচ চিনি থাকে তাহলে হয়তো তলিয়ে ভাববেন।'