লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বার্ধক্য ভাতা, কৃষক বন্ধু, পড়ুয়াদের ট্যাব বা মোবাইল কেনার টাকা আসল প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না এসে চলে যাচ্ছে অন্য অ্যাকাউন্টে। প্রতারণার এই বিরাট ঘটনা ধরা পড়েছে। আর এই কাজ করছে সাইবার প্রতারকরা। ঘটনা সামনে আসার পরেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দৈনিক বর্তমান সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, সরকারি পোর্টালে ঢুকে প্রকৃত প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরের বদলে অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সব অ্যাকাউন্টেই ঢুকেছে সরকারি অনুদানের টাকা।
প্রাথমিক ভাবে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, রাজস্থানের আলওয়ার এবং বিহারের গয়া গ্যাং-র মতো কোনও গ্যাং জড়িত রয়েছে বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যেই এমন প্রায় ৮০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।
এই প্রতারণার ঘটনায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবারই এনিয়ে তিনি কড়া নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে দ্রুত এই ধরনের সমস্যার সমাধান করা হয়। কয়েকটি জেলা থেকে আসা অভিযোগের তদন্ত সিআইডি-র হাতে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান পত্রিকার খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমানে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা লোপাটের ঘটনায় প্রতারকদের ২০০টিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ৮০টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৬৪টিতেই গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পড়ুয়াদের ট্যাব বা মোবাইল কেনার টাকা। এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির অধিকাংশই ঝাড়খণ্ড, বিহার, রাজস্থানের। তালিকায় রয়েছে মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর ও নদিয়া জেলাও।
‘তরুণের স্বপ্ন’র আওতায় পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় পুজোর আগে। রাজ্যের ১৮ লক্ষ পড়ুয়ার মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলার পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি বলে অভিযোগ আসে। তদন্তে নেমে জানা যায় সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে না গিয়ে সে টাকা গিয়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে। তারপরেই শিক্ষা দরফতরের তরফে এফআইআর করা হয়েছে। যে সব পড়ুয়ারা টাকা হাতে পায়নি, তাদের সেই টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার থেকেই টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। যদি কোনও পড়ুয়া ট্যাবের টাকা না পেয়ে থাকে, তা দ্রুত জানানোর কথা বলা হয়েছে।