পশ্চিমবঙ্গের ৫৬ জন বাসিন্দাকে বাংলাদেশি সন্দেহে চিঠি পাঠিয়েছে হরিয়ানা সরকার। দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, এই রাজ্যের একাধিক জেলার জেলাশাসকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে হরিয়ানা সরকারের তরফে। তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। সোমবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে অভিযোগ করেছিলেন মমতা। সেই সূত্র ধরেই এদিনও তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গের ৫২ জনকে বাংলাদেশি সন্দেহে চিঠি পাঠানো হয়েছে হরিয়ানা থেকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে এটা করা হয়েছে। সেই চিঠিগুলো এসেছে মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলাশাসকদের কাছে।
শুধু হরিয়ানা সরকারের তরফে নয়, অসমের ফরেনার ট্রাইবুনাল ফর কোকরাঝাড় থেকেও কয়েকদিন আগে এমনই আর এক চিঠি এসেছে বলেও দাবি করেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, অসম ও অন্য বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকারগুলো বাংলা ভাষা ও বাঙালিকে অপমানিত করার জন্য এসব চিঠি পাঠাচ্ছে।
অসম সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, 'অসম তাদের সীমারেখা লঙ্ঘন করছে। আপনারা নিজেদের চরকায তেল দিন। সেখানে কালীমন্দির ভাঙছেন, মানুষ উচ্ছেদ করছেন, অনেক মানুষের নাম বাতিল করা হয়েছে, বাড়িতে আগুন জ্বালানো হচ্ছে, এভাবে দেশ চালানো যাবে না, দেশ বিভক্ত হয়ে যাবে। দেশের অখণ্ডতা রক্ষিত হবে না।'
অন্য রাজ্য থেকে আসে চিঠি নিয়ে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করেন মমতা। বলেন, 'জেলা বেছে বেছে নাম পাঠাচ্ছে। তবে ভয় পাবেন না। এই রাজ্য সরকার তাদের কাজ করে যাবে। ওরা চাইছে ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ দিয়ে বিহার ও মহারাষ্ট্রের মতো নির্বাচনে জিততে। গতকাল তো জনবিস্ফোরণ হয়েছে। সেকথা বিরোধীদের ভুলে গেলে চলবে না।'
মমতার দাবি অন্য রাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থা করা হচ্ছে। আইনত কোনও রাজ্য সরকার এটা করতে পারে না, দাবি করে তাঁর আরও সংযোজন, ' ভারতের যে কোনও মানুষ যে কোনও জায়গায় কাজ করতে যেতে পারেন। এটা অধিকার। ভারতের সংবিধান সেই অধিকার দিয়েছে। আমাদের রাজ্যেও ভিন রাজ্যের দেড় কোটি মানুষ থাকেন। সব রাজ্যের মানুষ এখানে থাকেন। এখানে তো সমস্যা হয় না। আমাদের রাজ্যের লোক অন্য কোথাও কাজ করলে সমস্যা কোথায়? এই রাজ্যের মানুষের স্কিল, প্রতিভা আছে বলেই তো তারা অন্য রাজ্যে সুযোগ পাচ্ছেন।'
কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মমতা আরও বলেন, 'গুরগাঁও, অসম, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, দিল্লিতে মানুষকে আটকে রাখা হচ্ছে। এই সরকারের বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়েছে। আমি সব ভাষাকে ভালোবাসি। তাহলে বাংলা ভাষার মানুষকে অন্যরা সহ্য করতে পারছে না কেন?'