খড়দহ ও সোদপুর স্টেশনের মাঝখানে বন্ধ লেবেল ক্রসিংয়ে একটি স্করপিওর সঙ্গে হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেসের ধাক্কার ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সমস্যা। গত রবিবার সন্ধের ওই দুর্ঘটনায় দু’জন আহত হন। রেলসূত্রে খবর, পূর্ব রেলের হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনে অন্তত ২০টি লেভেল ক্রসিংয়ে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। যা রেলের বিশেষ মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সকাল ৮টা থেকে ১১টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই লেভেল ক্রসিংগুলোতে যানবাহন ও পথচারীদের পারাপারের হার এতটাই বেশি যে, প্রায়ই গেট বন্ধ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। এই পরিস্থিতির কারণে বহু গেটে ট্রেনকে গড়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়, যা যাত্রিবাহী ট্রেন লেটে রান করতে বাধ্য করে।
রেল আধিকারিকদের মতে, পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশনে খড়দহের ৯ নম্বর গেট ছাড়াও দমদম ক্যান্টনমেন্টের ১ এবং ২ নম্বর, বেলঘরিয়ার ২ নম্বর, ব্যারাকপুরের ১৪, টিটাগড়ের ১২, রানাঘাটের ৫৭ নম্বর এবং হাবড়া ও বারাসতে এমন একাধিক লেভেল ক্রসিং রয়েছে, যেগুলি সামলানো রেলের একার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। একাধিকবার সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়ে কোনও লাভ হয়নি। রেলের একার পক্ষে রক্ষী মোতায়েন ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেও লেভেল ক্রসিং সামাল দেওয়াও অসম্ভব হচ্ছে।
রেল সূত্রে খবর, হাওড়া ডিভিশনে রিষড়ায় ৩ ও ৪, উত্তরপাড়ায় ২সি, টিটাগড়ে ১২, বেলুড়ে দেড় নম্বর, বৈদ্যবাটিতে ১১ এবং বর্ধমানের তালিতে ৫৬ নম্বর স্পেশ্যাল গেটে একই সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ইতিমধ্যেই অনেক গেটের ক্ষেত্রে ওভারব্রিজ তৈরির প্রস্তাব রেল বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে।
শিয়ালদা ডিভিশনে ইতিমধ্যেই বারাসতে ১০ এবং ১১, ব্যারাকপুরে ১৪, টিটাগড়ে ৮, ৯, ১২, বারুইপুরে ২১, ইছাপুর, সোদপুর, কল্যাণী ও খড়দহে ৯ নম্বর গেটে উড়ালপুল বানানোর প্রস্তাব রেল বোর্ডের কাছে পাঠিয়েছে রেল। প্রস্তাব অনুমোদন পেলে সম্পূর্ণ প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হবে এবং পরে রাজ্য সরকারের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানা গেছে। প্রকল্পের খাতে খরচ হতে পারে প্রায় ৩৩০০ কোটি টাকা। লেভেল ক্রসিংগুলিতে যানবাহন ও পথচারীদের চাপ সামলাতে প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন।