
উচ্ছ্বাস, উল্লাস, কানফাটানো চিৎকার, চোখের জল, অবিশ্বাস, অবশেষে বিশ্বাস। মৃদু ঠান্ডার ডিসেম্বরে কলকাতা বিমানবন্দরের ছবিটা কি এরকমই হবে?
কলকাতায় ফের আসছেন লিওনেল মেসি। শহরজুড়ে এখন চাপা উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা আর অপেক্ষা। আগামী ১২ ডিসেম্বর কলকাতার মাটিতে পা রাখবেন ফুটবলের রাজপুত্র। পরের দিন, অর্থাৎ ১৩ ডিসেম্বর, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তাঁর জন্য আয়োজিত হয়েছে এক বিশেষ কনসার্ট ও কর্মসূচি। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের উপস্থিতিতে শীতের কলকাতার উষ্ণতা যে একটু হলেও বেড়ে উঠবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ কই। ফুটবলের মক্কা বলে পরিচিত শহরে আর্জেন্টিনার মহাতারকাকে একবার চোখের দেখা দেখার জন্য হিড়িক পড়ে্ যাবে, মত মেসির ভক্তদের।
কলকাতায় এসে আর্জেন্টিনার মহাতারকার পাতে কী কী বিশেষ খাবার থাকবে? শারীরির সক্ষমতা সর্বোচ্চ স্তরে রাখতে মেসিকে মেনে চলতে হয় কড়া ডায়েট। তবে কোথাও গেলে তিনি সেই নিয়মকে সরাসরি রেড কার্ড না হলেও হলুদ কার্ড দেখান বলে জানাচ্ছেন আয়োজকরা। মানে, স্থানীয় খাবার চেখে দেখেন বিশ্বজয়ী ফুটবলার। এবারও তার ব্যত্যয় হবে না।
মেগা ইভেন্টটির আয়োজক শতদ্রু দত্ত bangla.aajtak.in-কে জানিয়েছেন, কলকাতায় এসে মেসিকে দেওয়া হবে একটি খাঁটি বাঙালি খাবার। মেসির ভোজের মেনুর ব্যাপারে খোলসা করলেন তিনি। বলেন, 'মেসিকে আমরা পুরো বাঙালি খাবার খাওয়াব। যদিও উনি কঠোর ডায়েট মেনে চলেন, তবু অল্প অল্প করে চেখে দেখবেন।' মেসির দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সাধারণত থাকে চর্বিহীন প্রোটিন যেমন মুরগি ও মাছ, কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার যেমন মিষ্টি আলু, প্রচুর ফল, সবজি, বাদাম, বীজ ও জলপাই তেল। তিনি চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলেন তার বদলে থাকে স্বাস্থ্যকর পানীয়।
তবু শতদ্রুর দাবি, মেসি যেখানে যান, সেখানকার স্থানীয় খাবার একটু হলেও ট্রাই করেন। তাই কলকাতায় এসেও তিনি বাঙালি খাবারের স্বাদ নেবেনই। তাই কলকাতায় মেসির থালায় থাকবে বাঙালির প্রিয় নানা পদ। সুক্তো, আলু পোস্ত, সর্ষে ইলিশ, চিংড়ি মালাইকারি, ভাত ও ডাল। আর ডেজার্টে থাকবে মিষ্টি দই, যা শতদ্রুর কথায়, 'মাস্ট আইটেম'! তিনি বলেন, 'মেসি হয়তো পুরোটা খাবেন না, কিন্তু চামচে করে সবকিছু চেখে দেখবেন। কলকাতার সেরা সেফদের তৈরি খাবার আনানো হবে। বিশেষ করে মিষ্টি দইয়ের প্রতি উনি আগ্রহী।' মেসির থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে তাজ বেঙ্গল হোটেলে, আর মূল অনুষ্ঠান হবে যুবভারতীতে।
এই সফর নিয়ে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তেজনা তুঙ্গে। ২০১১ সালে মেসি প্রথমবার কলকাতায় এসেছিলেন, তখন তিনি ছিলেন আর্জেন্টিনার নবীন অধিনায়ক, তখনও পর্যন্ত বড় কোনও আন্তর্জাতিক ট্রফি জেতেননি। আজকের মেসি কিন্তু একেবারে অন্য মানুষ। বিশ্বকাপজয়ী এবং সর্বকালের সেরাদের একজন।
সব কিছু পরিকল্পনা মতো হলে, এক দশকেরও বেশি সময় পর আবার কলকাতার মাটিতে দেখা যাবে ফুটবলের জাদুকর লিওনেল মেসিকে। বাঙালি ভক্তদের কাছে এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। খেলার মাঠ আর খাবারের টেবিল, দুটোই মেসি-ময় হতে চলেছে।