'আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জরি...।' পিতৃপক্ষের অবসান আর দেবীপক্ষের সূচনালগ্নে এই স্তোত্রেই মুখরিত হয় আকাশ-বাতাস। আকাশবাণী কলকাতার 'মহিষাসুরমর্দিনী'। মহালয়ার দিন ভোরে যা না শুনলে দুর্গাপুজোর আমেজটাই যেন অনুভূত হয় না। তবে একটা সময়ে যে অনুষ্ঠান শোনার জন্য রেডিও সেট সারিয়ে রাখতেন বাড়ির বড়রা, সেই প্রোগ্রাম এখন শোনা হয় মুঠোফোনেই। মোবাইলে রেডিও অ্যাপ এমনী ইউটিউবে এক ক্লিকেই বাজতে শুরু করে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনী। ঐতিহ্যমণ্ডিত এবং কার্যত ইতিহাস হয়ে যাওয়া এই রেডিও অনুষ্ঠানটি এবছর কখন-কোথায় শোনা যাবে জানেন?
৩ কিংবদন্তির প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছিল আকাশবাণী কলকাতার এই 'মহিষাসুরমর্দিনী' অনুষ্ঠানটি। রচয়িতা বাণী কুমার, সুর সংযোজনায় পঙ্কজ কুমার মল্লিক এবং চণ্ডীপাঠ ও স্তোত্রপাঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। এছাড়াও মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিপ্রা বসু, উৎপলা সেন সহ আরও অনেকে অনুষ্ঠানে জনপ্রিয় গানগুলি গেয়েছিলেন। যা প্রতিবছর না শুনলে দেবীপক্ষের সূচনাই যেন ফিকে হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, এই 'মহিষাসুরমর্দিনী' অনুষ্ঠানটির অনেকগুলি ভার্সান তৈরি হয়েছিল আকাশবাণী কলকাতায়। প্রত্যেকটিই একে অন্যেক থেকে সামান্য আলাদা। প্রতি বছর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই ভার্সানগুলি চালায় আকাশবাণী। ২০২৫ সালের দেবীপক্ষের সূচনায় কোন ভার্সানের 'মহিষাসুরমর্দিনী' শোনা যাবে?
আকাশবাণী কলকাতার ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (ইঞ্জিনিয়ারিং) সুচিস্মিতা রায় বলেন, 'এ বছরের মহালয়ায় ১৯৭২ সালের মহিষাসুরমর্দিনী ভার্সান বাজানো হবে। ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের অনুষ্ঠানটি আকাশবাণী কলকাতার একাধিক চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে। যেমন- গীতাঞ্জলি, এফএম রেনবো, মৈত্রী এবং ডিটিএইচ বাংলা থেকে। এছাড়াও আকাশবাণী শিলিগুড়ি, আকাশবাণী মুর্শিদাবাদ এবং আকাশবাণী শান্তিনিকেতন থেকেও মহিষাসুরমর্দিনী শোনা যাবে। ঠিক ভোর ৪টের সময়ে শুরু হবে এই অনুষ্ঠান।' চ্যানেলের পাশাপাশি আকাশবাণী কলকাতার অ্যাপেও শোনা যাবে এটি। এছাড়াও অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে হবে লাইভ স্ট্রিমিং।
আকাশবাণী ছাড়াও বাংলার বেশ কিছু বেসরকারি এমএম চ্যানেলেও ওই একই সময়ে শোনা যাবে মহিষাসুরমর্দিনী। তবে ১৯৭২ সালের রেকর্ডিং শুনতে পাওয়া যাবে কেবলমাত্র আকাশবাণীর চ্যানেলগুলিতেই।