মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়মানুবর্তিতা এবং শরীরচর্চার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন মহুয়া মৈত্র। এই বয়সেও কিলোমিটারের পর কিলোমিটার অনায়াসে হেঁটে যেতে পারেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ইন্ডিয়া টুডের পডকাস্টে এসে এমনটাই জানালেন তৃণমূল সাংসদ। সঙ্গে শোনালেন এক মজার গল্পও।
পডকাস্টের সঞ্চালিকা মহুয়া মৈত্রর লাইফস্টাইল নিয়ে নানাবিধ প্রশ্ন করছিলেন। মিষ্টি তেমন খান না মহুয়া। হেজেলনাট চকোলেট প্রিয় হলেও খান মাঝেসাজে। যদিও বাঙালি মিষ্টি, বিশেষত গুড় তাঁর প্রিয়। তাই যতই নিয়মিত জিমে গিয়ে ঘাম ঝরান না কেন, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের মরশুনে মহুয়ার গুড় চাই-ই চাই। নিজের শরীরচর্চা নিয়ে আলোচনার মাঝেই ওঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ। মহুয়া বলেন, 'আমরা তো কিছুই নয়। এই বয়সেও দিদি যা স্বাস্থ্যসচেতন, ভাবা যায় না। উনি শরীর নিয়ে ভীষণ কড়া। কোনও অনিয়ম করেন না দিদি। আমরা হয়তো জিম বা শরীরচর্চা করলেও মাঝে মধ্যে এটা-সেটা খেয়ে ফেলি। তবে মমতা দিদি কখনওই তা করেন না।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত ট্রেডমিলে হাঁটেন বলেই জানান মহুয়া। তৃণমূল সাংসদের কথায়, 'দিদি যে প্রান্তেই থাকুন না কেন কর্মসূত্রে, ফিরে এসে উনি ট্রেডমিলে একবার অন্তত হাঁটবেনই। এই নিয়মের কখনও কোনও পরিবর্তন হয় না।'
হাঁটাহাটি নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এক মজার কাহিনি শোনাল কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। মহুয়া বলেন, 'সালটা ছিল ২০১২। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তেহট্টে আসার কথা ছিল। সেটা আমারই সংসদ এলাকার মধ্যে পড়ে। সেখানে আমাদের একটি ব়্যালি ছিল। তার আগের রাতেই কৃষ্ণনগরে এসে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতটা তিনি ছিলেন সেখানকার সার্কিট হাউসে। পরদিন সকালে আমরা গাড়ি নিয়ে সংশ্লিষ্ট স্থানে পৌঁছনোর জন্য রওনা দিই, যেখান থেকে আমাদের ব়্যালি শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে মাঝপথে একটি খড়ের গাড়ি উল্টে গিয়ে রাস্তা আটকে যায়। দিদি তৎক্ষণাৎ গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। গ্রামবাসীদের জিজ্ঞাসা করেন হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছতে কত সময় লাগবে। তারপর হাঁটতে শুরু করেন। আমিও দিদির সঙ্গেই ছিলাম। ভেবেছিলাম ২ কিলোমিটারের বেশি হবে না রাস্তা। তারপর তো দেখছি আমরা হেঁটেই চলেছি, হেঁটেই চলেছি, পথ শেষ হচ্ছে না। সঙ্গে যত পুরুষ ছিলেন, তাঁরাও একটা সময়ে হাঁপিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দিদি গটগট করে হাঁটছিলেন। পরে জানা গিয়েছিল, আমরা সেদিন মোট ১১ কিলোমিটার হেঁটেছিলাম।'