
জলপাইগুড়ির মাল এলাকায় এক BLO-র মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এই নিয়ে এবার সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি স্তম্ভিত এবং অত্যন্ত মর্মাহত। আজ জলপাইগুড়ির মাল এলাকায় আবার একজন BLO-কে হারালাম আমরা। শান্তিমনি এক্কা একজন আদিবাসী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ছিলেন। SIR প্রক্রিয়ার অসম্ভব চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন তিনি।'
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মোট ২৮ জন SIR শুরু হওয়ার পর থেকে প্রাণ হারিয়েছেন। কেউ ভয়ে, কেউ অনিশ্চয়তায়। আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত কাজের এবং মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভের সুরে বলেন, 'অপরিকল্পিত, লাগাতার কাজের চাপ অসহ্য হয়ে উঠছে, সে কারণেই এতগুলি নিষ্পাপ প্রাণ চলে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন এই অমানসিক কাজ চাপিয়ে দিচ্ছে। যে কাজ করতে ৩ বছর সময় লেগেছিল তা ভোটের আগে ২ মাসের মধ্যে করে ফেলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক মাস্টাররা BLO-দের উপর অমানসিক চাপ দিচ্ছে।' মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, মানবিক হয়ে কাজ করুন। আরও প্রাণহানি হওয়ার আগে এই অপরিকল্পিত প্রক্রিয়া বন্ধ করুন।
জলপাইগুড়ির মালবাজার মালবাজার বিধানসভা কেন্দ্রের ২০/১০১ বুথ অ্যাসেম্বলির বুথ লেভেল অফিসার ছিলেন শান্তিমনি এক্কা। SIR-এর কাজে মানসিক চাপে ভুগছিলেন তিনি, যে কারণে আত্মহত্যা বলে অভিযোগ পরিবারের। প্রতিদিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করতেন। অবশেষে ব্লক অফিসে গিয়ে BLO পদ থেকে পদত্যাগ পত্র দেন। BLO-র স্বামী জানান, তাঁর স্ত্রী পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু জয়েন্ট ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিস তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি। তাঁকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন। মৃতার স্বামী বলেন, 'ও বারবার আমার কাছে এসে বলত, আমি বাংলা বুঝি না। ভোট দেওয়ার জন্য মানুষ আমাকে ঘিরে ফেলত।' মালবাজারের ১০১ নম্বর বুথটি চা বাগান সংলগ্ন জনবহুল এলাকা। বেশিরভাগ মানুষ হিন্দিভাষী, যে কারণে ভাষাগত ত্রুটির কারণে বিএলও-কে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল।