বাংলার পর এবার অসমের বাঙালিদের হয়ে সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানকার বাঙালি ভাষী নাগরিকদের উপর অন্যায় অত্যাচার বলে সরব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। উত্তর পূর্ব ভারতের এই রাজ্যেও BJP নিজেদের অ্যাজেন্ডা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। সেখানকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের লড়াইতে তিনি সর্বদা পাশে থাকবেন বলেও মন্তব্য করেন মমতা।
এক্স হ্যান্ডল পোস্টে শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, 'দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রচলিত কথ্য ভাষা বংলা অসমেরও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রচলিত কথ্য ভাষা। সকল ভাষা ও ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে চাওয়া নাগরিকদের, তাদের নিজস্ব মাতৃভাষা ব্যবহার করার জন্য নির্যাতনের হুমকি দেওয়া বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক।' মমতার সংযোজন, 'অসমে BJP-র বিভাজনের রাজনীতির অ্যাজেন্ডা সমস্ত সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। অসমের মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ভাষার মর্যাদা, পরিচিতি এবং গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য যে সকল মানুষ লড়াই করছেন, আমি সেই সকল অকুতভয় মানুষের সঙ্গে আছি।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা জবাব দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, 'দিদি, আপনাকে মনে করাতে চাই, অসমে আমরা নিজেদের মানুষের সঙ্গে নিজেরা লড়াই করছি না। সীমান্তে মুসলিম অনুপ্রবেশ রুখছি আমরা। এখানে একাধিক এলাকায় হিন্দুরা নিজভূমেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়ছে। এটা রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা নয়, এটাই বাস্তব। এমনকী সুপ্রিম কোর্টও এই অনুপ্রবেশকে বহিরাগত শক্তির প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছে। আমরা যখন নিজেদের ভূমি, সংস্কৃতি এবং পরিচিতি নিয়ে লড়াই করছি, আপনি তখন রাজনীতি করছেন। আমরা ভাষা বা ধর্ম দিয়ে মানুষের বিভাজন করি না। অসমিয়া, বাঙালি, বোড়ো, হিন্দিভাষী, সমস্ত ভাষার মানুষকে সম্মান করি আমপা। আমরা অসমের বিভাজন রুখতে সর্বত ভাবে সক্রিয়। দিদি আপনি তখন একটি নির্দিষ্ট জাতির মানুষকে তোষণ করে চলেছেন। শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্কের জন্য। সীমান্তপারের অনুপ্রবেশ নিয়ে আপনি কোনও কথা বলথেন না। অসম নিজের হেরিটেজ, সাহজ এবং সাংবিধানিক স্বচ্ছতার বিষয়ে খুব স্পষ্ট।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বাংলা ভাষা মর্যাদা রক্ষা নিয়ে সরব হয়েছেন তখন শুক্রবার দুর্গাপুরে জনসভা করতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তৃণমূল কংগ্রেসকে লক্ষ্য করে বাংলা ভাষা নিয়ে আন্দোলনের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, 'TMC এবং বামেরা মিলে দিল্লিতে বহুদিন ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে সরকার চালিয়েছে। এর জন্য এদের বাংলা ভাষার কথা মনেই থাকে না। কিন্তু BJP সরকার এসে বাংলা ভাষাকে শাস্ত্রীয় ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। বাংলা ভাষাকে প্রেরণা, পরম্পরা ও পরিচয়ের মাধ্যম বলে মনে করি আমরা। আমাদের কাছে বাংলা ভাষার অহংকার সবার উপরে।'