সরকারি নার্সের চাকরি পেয়েছিলেন কেতুগ্রামের তরুণী রেণু খাতুন। কিন্তু চাকরি পেয়েও আনন্দ করতে পারেননি রেণু। সন্দেহের বশে স্বামী তাঁর হাত কেটে নেন। তবু জীবনযুদ্ধে পিছপা হতে রাজি নন এই সাহসী মেয়েটি। অদম্য সাহসে ভর করে নার্সিংহোমের শয্যাতে বসেই বাঁ হাতে লেখার চেষ্টা জারি রয়েছে তাঁর। যা সবটা নজরে পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তারপরই বুধবার বিকেলে ভবানীপুরে দাঁড়িয়ে মানবিক ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজ্য সরকার রেণু খাতুনের পাশে রয়েছে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, রেণুর পাওয়া নার্সিংয়ের সরকারি চাকরিটি বজায় থাকবে। আর বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিলেন, পূর্ব বর্ধমানেই ‘নন নার্সিং’ চাকরি দেবে রাজ্য সরকার। সেই মর্মে নিয়োগপত্রও তৈরি হয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীনই রেণুর প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী । জানান, "জিএনএম পাশ করেছেন রেণু। ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড তাঁকে পূর্ব বর্ধমানে রেকমেন্ড করেছে। স্টাফ নার্সের চাকরি পেয়েছিলেন। তাঁকে পূর্ব বর্ধমানে কাজে লাগানো হচ্ছে। নার্সিং গ্রেড এ থাকার জন্য তাঁর বেতন ২৯ হাজার ৮০০ টাকাই থাকবে। তবে নার্সিং না করে সে অন্য কোনও কাজ করবে। ওই লেটারটা ইতিমধ্যেই ইস্যু করা হয়ে গিয়েছে।"
রেণুর চিকিৎসা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওর হাতের চিকিৎসা আমরা করে দেব। তার ব্যবস্থাও হয়েছে। পুলিশ আইন অনুসারে পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতিমধ্যেই দোষীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের নোটিফিকেশন অনুসারে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টাফ নার্সদের বেতন ২৯ হাজার ৮০০ টাকা। সেটাই পাবেন রেণু। তার সঙ্গে যুক্ত হবে অন্য়ান্য ভাতা। সব মিলিয়ে প্রায় ৩৪ হাজার ১৩৬ টাকা রেণু খাতুন পেতে পারেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নার্সিং পরীক্ষার প্যানেলের ২২ নম্বরে নাম ছিল রেণু খাতুনের। কিন্তু স্ত্রীর সরকারি নার্সের চাকরি পছন্দ হয়নি স্বামী শের মহম্মদের। স্ত্রী যাতে কাজে যোগ দিতে না পারেন, সেইজন্য দুই ভাড়াটে দুষ্কৃতীকে দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় রেণুর কবজি থেকে ডান হাত কেটে নেয় শের মহম্মদ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দুই ভাড়াটে দুষ্কৃতী সহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।