বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কপালে এবং নাকে তাঁর গুরুতর আঘাত লেগেছে। দ্রুততার সঙ্গে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তাঁর মোট চারটি সেলাই হয়েছে। কপালে তিনটি এবং নাকে একটি সেলাই পড়েছে। রাতে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত সেখানেই রয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে এসএসকেএমের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 'পিছন থেকে ধাক্কা মারার (পুশ ফ্রম বাহাইন্ড) জন্য পড়ে গিয়ে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী।' আর এই বয়ান ঘিরেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রশ্ন ওঠে, কে পেছন থেকে ধাক্কা মারল মুখ্যমন্ত্রীকে, যার জন্য তিনি পড়ে গেলেন। যদিও পরে এসএসকেএমের ডিরেক্টর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, 'শারীরিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে পিছন থেকে কেউ ধাক্কা মেরেছেন, এটা বলতে চাইনি। আসলে পড়ে যাওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রীর পিছন থেকে ধাক্কার অনুভূতি হয়েছিল, কিন্তু তার মানে এই নয় যে কেউ তাঁকে ধাক্কা দিয়েছিল। মনে হয়েছিল, তিনি পেছন থেকে ধাক্কা খেয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেক সময় এরকম মনে হয়ে থাকতে পারে।'
পেছন থেকে ধাক্কা মারা-কী কারণে এমন মনে হয়?
এই বিষয়ে চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, 'একটা বিষয় হয় যখন সিনকোপ হয়। এর অর্থ হচ্ছে কিছুক্ষণের জন্য মস্তিষ্কে অক্সিজেন সাপ্লাই কমে যায়। তখন মাথা ঘুরে অনেক সময় পড়ে যায়। তখন মনে হয় কেউ ঠেলে দিয়েছে। কিন্তু আসলে তা নয়। সেই সময় ব্রেনে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। অনেকে তো মনে করতে পারেন না ঠিক কী হয়েছিল। আসলে এটা বলা উচিত ছিল যে রোগীর জানিয়েছেন যে তাঁকে কেউ পেছন থেকে ঠেলে দিয়েছে সেটা অনুভূতি হয়েছিল। পড়ে গিয়ে চোট না লাগলে সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেউ সুস্থ হয়ে যান।'
সূত্রের খবর, আগের থেকে ভাল রয়েছেন মমতা। আজ ফের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা সবসময় আঁটসাঁট থাকে। যদিও এর আগে এক ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে মমতার বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। পরে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এবারের ঘটনাতেও মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। মুখ্যমন্ত্রীর আরোগ্য কামনা করে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আরোগ্য কামনা করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মমতার আরোগ্য কামনা করেছেন প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। বলেছেন, 'এটা কীভাবে হল, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। তিনি আঘাত পেয়েছেন। আমরা চাই উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন। আগে সুস্থ হতে দিন। বাড়িতে কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা উচিত।'