আরও একটি বিধানমসভা ভোট দোরগোড়ায়। বছর ঘুরলেই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। বিরোধী শুভেন্দু অধিকারীর দাবি অনুযায়ী, আর ৮ মাস পরেই ভোট রাজ্যে। কিন্তু এখনও ২০২১ সালের নির্বাচনে নন্দীগ্রামের রেজাল্ট প্রসঙ্গ উঠছে বিধানসভায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, ২০২১ সালে তাঁকে হারানো হয়েছিল। কিন্তু আবার জিতে ফিরেছেন।
আজ অর্থাত্ সোমবার বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের রেজাল্টের প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, 'নন্দীগ্রামে আমাকে হারানো হয়েছিল। আমি ফের জিতে এসেছি।' মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ শুরু হতেই প্রবল চিত্কার করে স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি বিধায়কা। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমি হাউজে এলেই, বিরোধী দলের বিতর্ক, প্রশ্ন, করার মতো থাকে না বলে ওরা অপপ্রচার করে, স্লোগান দেয়৷ আপনি যদি আমাদের বাড়ি আসতে পারেন আমরাও তো যেতে পারি৷ ওদের হাফ মিনিস্টার আমাদের পাড়ায় এক পঞ্জাবি অফিসারকে জুতো মারেন।'
ভবানীপুরে জিতে মুখ্যমন্ত্রিত্বে প্রত্যাবর্তন
নন্দীগ্রামে পরাজয়ের পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রিত্ব ধরে রাখতে উপনির্বাচনে অংশ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুর থেকেই ফের প্রার্থী হন তিনি এবং বিপুল ভোটে জিতে ফেরেন বিধানসভায়। এর আগে ২০১১ ও ২০১৬ সালেও ভবানীপুর থেকেই জয়ী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিধানসভায় তীব্র আক্রমণ বিজেপিকে
এই প্রসঙ্গেই মঙ্গলবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমাকে হারানো হয়েছিল, কিন্তু আমি জিতে এসেছি। আগে আপনারা জিতে আসুন, তারপর কথা বলবেন।” এই মন্তব্যের সময় বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'আপনার লজ্জা থাকা উচিত। কীভাবে আপনি বাইরে বের হন, আমি জানি।'
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়েও সরব মুখ্যমন্ত্রী
সেদিন বিধানসভায় কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, রাজ্যকে বঞ্চিত করছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা পাঠানো হচ্ছে না, রাজ্যের প্রাপ্যও আটকে রাখা হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা। বিজেপি বিধায়করা শোরগোল শুরু করেন। সেই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ টেনে এনে মুখ্যমন্ত্রী নিজের বক্তব্য পেশ করেন।
নন্দীগ্রাম হারের মামলা এখনও আদালতে
২০২১ সালের নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তাঁরই একদা ঘনিষ্ঠ সহচর শুভেন্দু অধিকারী, যিনি সে সময় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ভোটের ফলাফলে দেখা যায়,মাত্র ১৯৫৬ ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরাজিত হয়েছেন। তবে সেই ফলাফলকে মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী আদালতের দ্বারস্থ হন। মামলাটি এখনও কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন।