সোমবার, ২ মে তৃণমূল সরকারের বর্ষপূর্তি। এই দিনেই গতবছর তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সকালে মা-মাটি-মানুষকে দিনটিকে উৎসর্গ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তবে শাসক দলের আনন্দ মাটি করতে পাল্টা প্রচারে নেমে বিরোধী বিজেপি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ তুলে টুইটারে সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে, গঙ্গার ঘাটে সাত সকালে হত কর্মীদের উদ্দেশে তর্পণ করেছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় টুইট করেছেন,'আজকের দিনটি আমি মা-মাটি-মানুষের কাছে উৎসর্গ করলাম এবং সকলের কাছে আমার আহ্বান, আজ থেকে এই দিনটি 'মা-মাটি-মানুষ দিবস' বলে অভিহিত হোক। জয় হিন্দ, জয় বাংলা।' সেই সঙ্গে নাম না নিয়ে বিজেপির দিল্লির নেতাদেরও নিশানা করেছেন। পাশাপাশি দিয়েছেন আগামীর বার্তাও। তিনি লিখেছেন,'গতবছর এই দিনে দেশের কর্তাব্যক্তিদের আস্ফালনের বিরুদ্ধে বাংলার মা- মাটি- মানুষ তাঁদের অদম্য সাহসের পরিচয় রেখেছিলেন। সেজন্য আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।' যোগ করেছেন,'মা- মাটি-মানুষ সেদিন সারা পৃথিবীকে দেখিয়েছিলেন যে, গণতন্ত্রে মানুষের শক্তির চেয়ে বড় কোন শক্তি নেই। প্রকৃত জাতি-নির্মাণে আমাদের প্র্য়াস জারি রাখতে হবে, কারণ অনেক যুদ্ধ লড়তে ও জিততে হবে।' (বানান ও বাক্যগঠন অসম্পাদিত)
গতকাল, রবিবার কলকাতার জায়গায় জায়গায় তৃণমূল সরকারের বর্ষপূর্তিকে কটাক্ষ করে ব্যানার দিয়েছে বিজেপি। ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ তুলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সংকল্প সপ্তাহ পালনের ডাক দেওয়া হয়েছে। ব্যানারে শাসক দলকে খোঁচা দেওয়া হয়েছে,'ভোট পরবর্তী হিংসার বর্ষপূর্তি।' এ দিন একের পর এক ভিডিও টুইট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ভিডিওয় শাসক দলের হাতে বিজেপি কর্মীরা প্রহৃত হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। শুভেন্দু লিখেছেন, 'গত বছর আজকের অভিশপ্ত দিনে, পশ্চিমবঙ্গে শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার "দোষে" সাধারণ ভোটার, বিরোধী দলের বিশেষত বিজেপি কর্মী সমর্থক ও তাদের পরিবারবর্গের ওপর নেমে আসে শাসক তৃণমূল দলের পোষ্য গুন্ডাদের ভয়ংকর পাশবিক খাঁড়া।
অমানুষিক নির্যাতনের নজির সৃষ্টি হয় বাংলায়।' তাঁর সংযোজন,'ভোট পরবর্তী হিংসায় এমন পরিবেশ তৈরি করা হয় সরকারি ব্যবস্থাপনায়, যেখানে আইনের রক্ষকরা পাকাপোক্ত হিংসার রোডম্যাপ তৈরি করে দেয়, কিভাবে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী সমর্থকদের ভীত ও সন্ত্রস্ত করে দেওয়া যায় চিরতরে, যাতে ভবিষ্যতে শাসক তৃণমূল দল কোনো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন না হয়।' (বানান ও বাক্যগঠন অসম্পাদিত)
এ দিন সকালে কাশীপুর সর্বমঙ্গলা ঘাটে ভোট পরবর্তী হিংসায় নিহত কর্মীদের আত্মার শান্তির উদ্দেশে তর্পন করেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য,'গণতন্ত্র হত্যার কাজ তৃণমূলের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। তৃণমূলের হিংসার আর রক্তলোলুপতার বলি হয়েছেন আমাদের ২০০ অধিক কার্যকর্তারা। তাঁদের সকলের আত্মার শান্তি কামনায় তর্পণ করলাম।'
বিজেপির এই প্রচারকে পাত্তা দিচ্ছে না তৃণমূল। তাদের দাবি, মোদী-শাহ আসার পরেও লজ্জাজনকভাবে হেরেছে বিজেপি। বলেছিল ২০০ আসন পাহবে। কিন্তু ১০০ ছাড়াতে পারেনি। তাই অপপ্রচার করছে।
আরও পড়ন- টিকা নেওয়ার জন্য কাউকে জোর করা যাবে না: সুপ্রিম কোর্ট