নজিরবিহীন বৃষ্টির জেরে মঙ্গলবার সন্ধে পর্যন্ত জলমগ্ন সল্টলেক, রাজারহাট ও নিউ টাউনের বিস্তীর্ণ এলাকা। এই পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষকেই। তাঁর দাবি, মেট্রোর কাজকর্মে যত্রতত্র ফেলে রাখা মালপত্রে বুজে গিয়েছে নালা-নর্দমা, ফলে জল নামছে না। এনকেডিএ ও হিডকো এলাকার জল জমে থাকার দায় মেট্রোকে বহন করতে হবে বলেই স্পষ্ট বার্তা দেন তিনি। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সন্ধ্যায় কালীঘাটের বাসভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে একাধিক জেলার দুর্গাপুজো উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মঞ্চ থেকেই তোপ দাগেন তিনি। বলেন, 'মেট্রোর কাজের জন্য সল্টলেক ও নিউ টাউনের বিভিন্ন জায়গায় মালপত্র পড়ে রয়েছে। সেই কারণেই জল জমেছে হিডকো ও এনকেডিএ এলাকায়। মেট্রোকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে মালপত্র সরাতে হবে।'
একইসঙ্গে দুর্যোগকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করার চেষ্টাকারীদেরও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা। তাঁর কথায়, 'যারা দুর্যোগ নিয়ে রাজনীতি করে, তাদের আমি ধিক্কার জানাই। উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, দিল্লি বা মহারাষ্ট্রে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলেও আমি মন্তব্য করিনি। সৌজন্যের একটা সীমা থাকা উচিত।' ডিভিসির বিরুদ্ধে ফের একবার পলি না-তোলার অভিযোগও তোলেন তিনি।
দিনভর দুর্যোগে শহর কার্যত বিপর্যস্ত। সকালেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনায় বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সিইএসসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে জানান, মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। তাঁর ঘোষণা, 'জীবনের কোনও বিকল্প নেই, তবু মৃতদের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে। সিইএসসি-কে বলেছি পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে।' এ বিষয়ে সংস্থার কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েন্কার সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে।
অন্যদিকে, দুর্যোগের জেরে মঙ্গলবার নির্ধারিত বেশ কিছু পুজোর উদ্বোধন স্থগিত রাখতে হয় মমতাকে। বুধবার চেতলা অগ্রণীর উদ্বোধনে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও জলমগ্ন হওয়ায় সেই কর্মসূচিও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।