বিধানসভা উপ নির্বাচনে জয়ী দুই তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেনের শপথগ্রহণ ঘিরে জট চলছেই। কোথায় শপথবাক্য পাঠ করানো হবে তা নিয়ে বিধানসভা ও রাজভবনের মধ্যে দূরত্ব ক্রমেই চওড়া হচ্ছে। এদিকে এনিয়ে জ মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি একপ্রকার বুঝিয়েই দিয়েছেন যে সদ্য জয়ী দুই তৃণমূল বিধায়ক শপথবাক্য পাঠ করতে রাজভবনে যাবেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'জেতার পরেও আমার এমএলএ রা বসে আছেন, রাজ্যপাল শপথ করতে দিচ্ছেন না। ওনার কি অধিকার আছে শপথ করতে না দেওয়ার। উনি স্পিকারকে অথেরাইজড করতে পারেন, ডেপুটি স্পিকারকে অথেরাইজড করতে পারেন। না হলে নিজে বিধানসভায় যাবেন। ওরা সবাই কেন রাজভবনে যাবে। রাজভবনে যা কীর্তি কেলেঙ্কারি চলছে, তাতে মেয়েরা ওখানে যেতে ভয় পাচ্ছে, আমাকে অভিযোগ করেছে।'
বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে শপথ নিতে চান সায়ন্তিকা-রায়াত। অন্য দিকে, রাজভবনে শপথগ্রহণ চান রাজ্যপাল বোস। এই নিয়ে টানাপড়েনে বুধবার দুপুরে বিধানসভায় হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধর্নায় বসে পড়েন সায়ন্তিকা এবং রায়াত। বৃহস্পতিবারেও বিধানসভায় ধর্নায় বসছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকার। অন্য দিকে, রাজভবন সূত্রে খবর, বুধবার দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত শপথের জন্য রাজভবনে অপেক্ষা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। তারপরে তিনি দিল্লি গিয়েছেন বলে খবর।
বরানগরে বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন সায়ন্তিকা, ভগবানগোলা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন রায়াত। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হয় যে, রাজভবনের সবুজ সঙ্কেত পাওয়া যাচ্ছে না বলে ভোটে জিতেও শপথ নিতে পারছেন না সায়ন্তিকা এবং রায়াত। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হতেই ব্যক্তিগত ভাবে চিঠি পাঠিয়ে শপথ গ্রহণ করতে রাজভবনে আসতে বলা হয় সায়ন্তিকা এবং রায়াতকে। তবে বিধানসভার স্পিকারকে এ নিয়ে কিছু জানায়নি রাজভবন। পরে বিধানসভার সচিবালয়ের কাছ থেকে বিধায়ক সংক্রান্ত কিছু তথ্য চেয়ে পাঠায় রাজভবন। তাতেই ক্ষুব্ধ হন স্পিকার। এরপরই চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যপালকে সাংবিধানিক নিয়ম স্মরণ করান তিনি। সায়ন্তিকারাও চিঠি দিয়ে রাজ্যপালকে জানান যে, তাঁরা বিধানসভায় স্পিকারের কাছে শপথ নিতে চান। ২৬ জুন রাজভবনে এসে শপথগ্রহণ করার জন্য সায়ন্তিকা এবং রায়াতকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। সোমবার রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে সায়ন্তিকা জানান যে, রাজভবনে বিধায়ক পদে শপথ নিতে চান না তিনি। বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শপথ নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন সায়ন্তিকা। বিধায়কেরা রাজভবনে না গিয়ে বুধবার বিধানসভায় রাজ্যপালের আসার অপেক্ষায় ছিলেন সায়ন্তিকা এবং রায়াত। তারপরেই তাঁরা বিধানসভার সামনে ধর্নায় বসে পড়েন।