জীবনে যত কষ্টই থাক না কেন। এক প্লেট গরম বিরিয়ানি কিন্তু সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে। পার্কসার্কাস ব্রিজে হাতেনাতে মিলল প্রমাণ। জীবনের কষ্ট-বেদনায় সেতুর মাথায় উঠে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু শেষমেশ তাঁকে নামী রেস্তোরাঁর বিরিয়ানি ও চাকরি খুঁজতে সহায়তা করার কথা দেন পুলিশকর্মীরা। তারপরেই সেতুর মাথা থেকে নিচে নেমে আসেন তিনি।
সূত্রের খবর, বছর ৪০-এর ওই ব্যক্তির টাইলস-পাথরের ব্যবসা রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে সেই ব্যবসায় মন্দা চলছে। শুধু তাই নয়। তাঁর পারিবারিক জীবনেও কঠিন সময় চলছে বলে জানান। তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁর বিবাহবিচ্ছেদও হয়ে যায়। স্ত্রী ও ছোট মেয়ে তাঁর সঙ্গে থাকেন নাা। বড় মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে থাকেন তিনি। তবে সেখানেও আর্থিক অনটনের কারণে মেয়ের কাছে কথা শুনতে হয় বলে দাবি তাঁর।
এই সবকিছু মিলিয়ে বেশ কঠিন আর্থিক ও মানসিক পরিস্থিতির মধ্যে ছিলেন ওই ব্যক্তি। সেই কারণেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন বাইকে মেয়েকে বসিয়ে সায়েন্স সিটির দিকে যাচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। দুপুর আড়াইটে নাগাদ পার্ক সার্কাস সেতু পার হন। এমন সময়ে রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে পড়েন। মেয়েকে জানান ফোন পড়ে গিয়েছে। সেটা আনতে যাচ্ছেন।
এই বলে মেয়েকে দাঁড় করিয়ে রেখে ব্রিজের দিকে হেঁটে আসেন। তারপর উঠে পড়েন ব্রিজের লোহার বিম বেয়ে।
তাঁকে ব্রিজের উপর দেখেই পথচারীরা চেঁচামেচি শুরু করে দেন। তাই দেখে ওই ব্যক্তিও নিচে লাফ দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন। এরই মধ্যে পথচারীদের কেউ পুলিশে জানান। ততক্ষণে সেখানে প্রচুর সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়ে গিয়েছেন।
পুলিশ এসেই প্রথমে দুর্যোগ মোকাবিলা টিম ও দমকল বিভাগের কর্মীদের ডেকে নেন। পুলিশকর্মীরা জানান, ওই স্থান থেকে লাফ দিলে বিদ্যুতের তারে বা নিচে রেললাইনে পড়ার আশঙ্কা ছিল। তাই তাঁর প্রাণরক্ষার জন্য কোনও চেষ্টার খামতি রাখা হয়নি।
এরই মধ্যে ওই ব্যক্তির মেয়ে সেখানে এসে পৌঁছান। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন পুলিশকর্মীরা। এরপরেই ওই ব্যক্তিকে চাকরি পেতে সহায়তা করার প্রস্তাব দেন পুলিশকর্মীরা।
এতে অনেকটা শান্ত হন ওই ব্যক্তি। তারপর তাঁকে নিচে নেমে আসতে নামী রেস্তোরাঁর বিরিয়ানির অফার দেন পুলিশকর্মীরা। সব শুনে শেষ পর্যন্ত ব্রিজ থেকে নেমে আসেন ওই ব্যক্তি।
ঘটনার ফলে শহরের ব্যস্ত এলাকার প্রধান রাস্তায় কার্যত জ্যাম লেগে যায়। ওই ব্যক্তিকে নামানোর পর পুলিশ তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়।