ফের শহরে আগুন। কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ও শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা পাথুরিয়াঘাটার একটি কাপড়ের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। দাউদাউ করে জ্বলতে দেখা যায় গোটা চারতলা বাড়িটি । দমকলের ১০টি ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দু’জনের। জখম আরও একজন। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আপাতত আগুন নিয়ন্ত্রণে।
জানা যাচ্ছে, ৬৫/এ পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের ওই চারতলা ভবনের চারতলায় আগুন লাগে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন, আর মুহূর্তেই দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে গোটা চতুর্থ তলা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন জানিয়েছেন, ওই তলায় একটি কাপড়ের গুদাম ছিল, সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। গুদামে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন ছড়াতে সময় নেয়নি। এর ফলে বিল্ডিংয়ের ভিতরে থাকা মানুষজন চরম সংকটে পড়েন। তারা প্রাণ বাঁচাতে ছাদের দিকে ছুটে গেলেও সেখানে ছিল আরেক বিপদ—ছাদের দরজায় তালা। বেরোনোর আর কোনও রাস্তা না পেয়ে ভিতরে আটকে পড়েন কয়েকজন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকল । তবে পাথুরিয়াঘাটা এলাকার গলিগুলি চরম সংকীর্ণ হওয়ায় দমকলের ইঞ্জিন ঢুকতে সমস্যা হয়। অনেক চেষ্টা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে অবশেষে ১০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন দমকল কর্মীরা। ততক্ষণে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।
আগুন নেভানোর পর ওই বিল্ডিং থেকে দুই ব্যক্তিকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে একজন স্থানীয় এক মন্দিরের পুরোহিত বলেই জানা গিয়েছে। কীভাবে ওই কাপড়ের গুদামে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দমকল তা খতিয়ে দেখছে। তবে দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই আগুন লাগতে পারে। দমকল ও পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে, একটি বহুতল কমার্শিয়াল ভবনের ছাদে তালা দেওয়া থাকল কীভাবে? অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার ঘাটতি ও নিরাপত্তা বিধি না মানার অভিযোগ উঠছে ভবনের মালিকের বিরুদ্ধে।