৩৯ বছরের রেকর্ড ভেঙে প্রবল বৃষ্টির সাক্ষী হয়েছে তিলোত্তমা। উৎসবের প্রাক্কালে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ থেকে ১১ জন মানুষ। জমা জলে তড়িদাহত হয়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসন এবং CESC কার্যত একে অপরের দিকে দায় ঠেলেছে। মোমিনপুর এবং পোর্ট এলাকার হাসান শাহ রোডে এমনই দুই মৃতের পরিবারের সঙ্গে বুধবার দেখা করতে পৌঁছন ফিরহাদ হাকিম। আদৌ কি মৃতের ছেলে চাকরি পাবে? প্রশ্নের মুখে পড়লেন কলকাতার মেয়র।
এদিন, হাসান শাহ রোডে মৃতের স্ত্রী ও দুই ছেলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা নির্দেশ দিয়েছেন। যে সহ নাগরিকরা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। সেই নির্দেশ নিয়েই আমি দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। ভাই হিসেবে ওদের সংসারের পাশে আছি। ওকে তো ফিরিয়ে দিতে পারব না। দু'টো ছেলে ছোট, বিধবা স্ত্রী রয়েছেন। তাঁদের পাশে থাকব, ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করব।' মৃতের স্ত্রীকে শান্তনা দিতে গিয়ে তাঁর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় মহানাগরিককে। তিনি আশ্বস্ত করে জানান, সরকারি চাকরির বন্দোবস্ত করা হবে মৃতের এক ছেলের। এরপরই মৃতের বিধবা স্ত্রী বলেন, 'আপনি এখন এসে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, আদৌ এই কথা রাখবেন কি? ছেলের চাকরি নিশ্চিত করছেন?' জবাবে ফিরহাদ বলেন, 'এটা আমার এলাকা। আমি আপনাদের পাশে থাকবই। আমি আপনার ভাই হিসেবে পাশে থাকব।'
বানভাসি কলকাতা। মঙ্গলবারের ব্যাপক বিপর্যয়ের পর বুধবারও সকাল থেকেই জলযন্ত্রণায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। একাধিক এলাকা জলমগ্ন। কোথাও হাঁটু তো কোথাও এখনও রয়েছে কোমর পর্যন্ত জল। একাধিক এলাকায় CESC-র খোলা বিদ্যুতের তারে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয়েছে কলকাতার প্রায় ১০ নাগরিকের। মারা গিয়েছে পথকুকুরও। এই দুর্যোগে যাঁরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলেন, তাঁদের পরিবারের মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। যদি CESC চাকরি দেয় তো ভাল, না হলে সরকারের তরফে চাকরি ও আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, 'রাজ্য সরকারও মৃতদের পরিবারের পাশে আছে । জীবনের বিকল্প অর্থ হয় না । পুজোর আগে এতগুলো জীবন চলে গেল। সকলকে অনুরোধ করব জল থাকাকালীন কেউ রাস্তায় বেরোবেন না।' তিনি আরও বলেন, 'এর আগেও একাধিক দুর্ঘটনা হয়েছে, কিন্তু CESC সতর্কভাবে কাজ করছে না, এভাবে যেন মানুষের প্রাণ না যায় । CESC-কে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, চাকরিও দিতে হবে।'
CESC-র তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় করা পোস্টে লেখা হয়, 'স্ট্রিট লাইট পোল, ট্রাফিক লাইটগুলি না আমাদের মালিকাধীন, না সেইগুলি আমরা রক্ষণাবেক্ষণ করি, সে সেগুলি আমাদের দ্বারা পরিচালিত। আমাদের দল দিনরাত কাজ করছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আমরা সবসময়ই সংস্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।'