সক্রিয় রাজনীতিতে তিনি দীর্ঘদিন ধরে নেই। কিন্তু আজও 'কমরেড' বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের বাম রাজনীতির অন্যতম মুখ। তিনি না থেকে প্রবলভাবে আছেন। এবারও তার ব্যত্য়য় হল না। ব্রিগেডের আগে শনিবার বুদ্ধদেবের পাম অ্যাভিনিউর বাড়িতে গিয়েছিলেন মীনাক্ষীরা। রবিবার ব্রিগেড ময়দানে বুদ্ধবাবুর শুভেচ্ছাবার্তা পাঠ করলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক।
এ দিন সভামঞ্চে মীনাক্ষী বলেন, ' ১৯৬৮ সাল ৯ জুন তৈরি হয়েছিল ডিওয়াইএফআই। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়ি কাল গিয়েছিলাম। তাঁর কাছ থেকে লড়াইয়ের উষ্ণতা নিয়ে ফিরেছি। স্ত্রী ও মেয়ের মাধ্যমে তিনি বার্তা পাঠিয়েছেন-যেখানে ডাক পড়ে জীবন মরণ ঝড়ে আমরা প্রস্তুত। এটাই ডিওয়াইএফআই। ব্রিগেডের সভার সাফল্য কামনা করেছেন তিনি।'
৫০ দিন ধরে রাজ্যজুড়ে ইনসাফ যাত্রা করেছে ডিওয়াইএফআই। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চলেছে এই যাত্রা। তার পর রবিবার ব্রিগেডে সভা করল সিপিএমের যুব সংগঠন। ২০০৮ সালে শেষবার ব্রিগেডের মাঠে সমাবেশ। তার ১৬ বছর ব্রিগেড ভরাল সিপিএমের যুব সংগঠন। এ দিন সভায় মীনাক্ষী বলেন,'কোন গর্ধবরা বলে বামপন্থীরা শূন্য? আসলে শূন্যের মূল্য ওরা জানে না। ওরা বামপন্থীদের শক্তিকে ভয় পায়। আমাদের কোনও আক্ষেপ নেই। আমাদের কোনও রাগ নেই। লড়াইয়ের মাঠে বাধা আসে। সেটা তুড়ি মেরে অতিক্রম করতে জানে বামপন্থীরা।'
তিনি আরও বলেন,'বামপন্থীরা একটা পাড়ায় রাজনীতি করতে গুঁতোগুঁতি করে না। বামপন্থীদের লড়াই একটা গলির জন্য নয়। একটা বিধায়ক, একটা সাংসদ পদের জন্য লড়াই করে না। যতদিন এদেশের মাটিতে অপশাসন লুট, অত্যাচার চলবে বামপন্থীরা লড়ে যাবে। আমাদের কাজ গোটা সিস্টেম বদল করা। অনেক ছোট থেকে এসেছি বাবার হাত ধরে। ওই কোণে বসতাম। রাজনীতি করতে গেলে চুরি করতে হবে কেউ শেখায়নি।'
সিস্টেম বদলের পাশাপাশি প্রত্যাবর্তনের বার্তাও দিয়েছেন মীনাক্ষী। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কাদের দেশের সংসদে পাঠানো উচিত, সে নিয়েও রাজ্যবাসী যাতে 'সচেতন' হন, সেই কথাও বলেছেন তিনি। মীনাক্ষী বলেছেন, 'কামব্যাক করার জন্য লড়াই। আমরা জানি, এটা টি-২০ ম্যাচ নয়। টেস্ট ম্যাচ।' এই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সদ্য ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ম্যাচে সিরাজের প্রসঙ্গ টানেন মীনাক্ষী। তাঁর কথায়, 'ম্যাচ জেতাতে এরকম প্লেয়ার নামবে'। DYFI নেত্রী রাজ্যবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, 'মাথা উঁচু করে বাঁচতে গেলে লড়াইয়ে আসুন।' রাজনীতির কারবারীদের একাংশের মত, লোকসভা নির্বাচনে আগে হারানো জমি পুনুরুদ্ধার করার বার্তা দিলেন মীনাক্ষীরা। সিস্টেম বদলে 'কামব্যাক'-এর যে বার্তা দিলেন মীনাক্ষী, তা বঙ্গ রাজনীতিতে নয়া মাত্রা যোগ করল।