ব্যারিকেড, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা টপকে নবান্নের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁদের ডাকেই শনিবারের এই নবান্ন অভিযানে যোগ দিয়েছেন কাতারে কাতারে মানুষ। সেখানেই পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁদের উপর লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিতার বাবা-মা দু'জনেই অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁদের মারধর করেছে। কিন্তু এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে লালবাজার।
কী বলছে কলকাতা পুলিশ?
কলকাতা পুলিশের ডিসি পোর্ট হরিকৃষ্ণ পাই বলেন, 'এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের তরফে নির্যাতিতার বাবা-মাকে কোনও শারীরিক নিগ্রহ করা হয়নি।' তাঁদের সঙ্গে পুলিশের কোনও ধস্তাধস্তি হয়নি বলেও জানান এই পুলিশ আধিকারিক।
কী অভিযোগ নির্যাতিতার বাবা-মায়ের?
মিছিল রুখতে ব্যারিকেডে শহর মুড়ে ফেলেছিল কলকাতা ও হাওড়া পুলিশ। তা সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। এর মাঝেই পার্ক স্ট্রিট এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের। লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার বাবা-মাও সেই লাঠির আঘাতে আহত হয়েছে বলে দাবি BJP-র।
নির্যাতিতার মা বলেন, 'বাড়ি থেকে বেরোনোর পর থেকেই গাড়ির নম্বর সব জায়গায় দিয়ে দিয়েছে পুলিশ। রীতিমতো চোর পুলিশ খেলে খেলে আমরা কোনওমতে ধর্মতলায় পৌঁছেছিলাম। সেখানে রাস্তায় ফেলে আমাকে চার-পাঁচ জন পুলিশ মেরেছে। আমার শাখা ভেঙে দিয়েছে। মাথা ফুলে গিয়েছে। পিঠে মেরেছে।' তাঁর সংযোজন, 'আমি অনড়। নবান্নে যেতে চাই। কেন মেয়েকে খুন করা হল কাজের জায়গায়? তখন কেন পুলিশ তৎপর ছিল না। পুলিশ আমাদের উপর অত্যাচার করছে। ব্যারিকেড যদি না সরায় ওরা আজ আমি ব্যারিকেডের উপর দিয়েই নবান্নে পৌঁছব।'
নির্যাতিতার বাবাকেও পুলিশ মেরেছে বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, 'হ্যাঁ আমাকেও মেরেছে পুলিশ। লাঠিচার্জ করেছে। কোনও আধিকারিক সামনে আসছে না। লুকিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ আটকালেও আমরা নবান্নে যাবই।'
হাসপাতালে নির্যাতিতার মা
ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার মা-কে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে দেখছেন। এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, 'ওঁর মাথায় কোনও ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করার ফলেই ভুলে উঠেছে। পিঠেও ভারী বস্তুর আঘাত রয়েছে। হাতে শাখা ভেঙে যাওয়ার কেটে গিয়েছে। ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হবে তাঁকে। সিটি স্ক্যান করার পর তবেই জানা যাবে চোট কতটা গুরুতর।'