করোনার ভ্য়াকসিন দেওয়ার নাম করে নির্বীজকরণ। একাধিক পুরুষের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে চাঞ্চল্য নদিয়ায়। পুরুষরাও আতঙ্কিত। কোনওরকম সম্মতি ছাড়া একাধিক পুরুষের নির্বীজকরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই মর্মে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে।
ঘটনা ফুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। স্থানীয় আশাকর্মী ও ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এই নির্বীজকরণ করছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বৃদ্ধ, মানসিক ভারসাম্যহীনদেরও নাকি জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য অপারেশন করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ কতটা সত্যি তার তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রথম অভিযোগ করেন মাধব দেবনাথ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর স্ত্রীর জন্মনিয়ন্ত্রণের অপারেশন আগেই করা হয়েছে। দুই মেয়েও রয়েছে সেই ভদ্রলোকের। সেই ৫৫ বছরের মাধববাবুর নির্বীজকরণ করানো হয় বলে অভিযোগ।
পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক মাধব দেবনাথ। কয়েকদিন আগে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁর কর্মস্থলে ফেরার কথা ছিল। তার আগেই তাঁকে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ার নামে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে এনএসভি করে রাস্তায় ছেড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
গত মাসের ২৭ তারিখ মাধববাবুর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, ফুলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁকে নিয়ে গিয়ে এনএসভি করানো হয় এবং তাঁকে বাড়ির অনেকটা দূরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে সন্ধের আগে পরিবারের লোকজন খবর পায় রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা।
সেখান থেকে অচৈতন্য অবস্থায় মাধববাবুকে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। সেখানেই পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন মাধববাবুর সম্মতি ছাড়া নির্বীজকরণ করা হয়েছে তাঁর। ঘটনায় অভিযুক্ত এলাকারই দুজন আশা কর্মী এবং ফুলিয়া হাসপাতালে চিকিৎসকরা। এদিতে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।
অভিযোগ, খোকন দেবনাথ নামে বছর ৬২-র এক ব্যক্তিরও নির্বীজকরণ করা হয়েছে। তিনিও শান্তিপুর থানায় মঙ্গলবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাচক্রে সেই ব্যক্তি নিঃসন্তান। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, নিঃসন্তান ব্যক্তির নির্বীজকরণ কেন করা হচ্ছে?
এদিকে যে আশাকর্মীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তিনি জানিয়েছেন, সরকারি নিয়ম মেনেই যা করার করেছেন। যদিও আশাকর্মীর বক্তব্যের সঙ্গে মিল নেই স্বাস্থ্যভবনের নিয়মের। সেখান থেকে জানা যায়, নির্বীজকরণের বিষয়টি একেবারেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিজের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। কোনও ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া এটা করা যায় না।