নারদ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টে তিনি হলফনামা দাখিল করতে চেয়েছিলেন। তবে হাইকোর্ট তা নাকচ করে দিয়েছিল। নারদ মামলায় তাঁকে মামলার পার্টি করেছে সিবিআই।
ওই মামলা গ্রেফতার করা হয়েছিল ৩ তৃণমূল শীর্ষ নেতা এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে। এঁরা হলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, প্রাক্তন মন্ত্রী, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। কলকাতায় তাঁদের গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।
তাঁদের গ্রেফতারের পর কলকাতায় সিবিআই অফিসে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দীর্ঘক্ষণ সেখানে ছিলেন। সিবিআই আদালতে এর বিরুদ্ধে জানিয়েছিল। তদন্তে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছিল।
এদিকে, তিন তৃণমূল নেতা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলা। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা এলাকায় এলাকায় বিক্ষোভ দেখালেন। অভিযোগ উঠেছে, কখন কখনও সেই বিক্ষোভ হিংস্র আকার নিয়েছে।
তিন তৃণমূল নেতা এবং প্রাক্তন মেয়র নিম্ন আদালত জামিন মঞ্জুর করলেও উচ্চ আদালত তার ওপর স্থগিতাদেশ দেয়। ফলে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় সংশোধনাগারে।
নারদকান্ডে অভিযুক্ত তৎকালীন চার বিধায়কের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করতে পারবে সিবিআই। এই মর্মে অনুমতি দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এর মধ্যে তিনজন তৃণমূলের এবং একজন বিজেপির। অনেকের মতে, এই অনুমতি দিয়ে রাজ্যপাল বুঝিয়ে দিলে, তিনি রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাতের পথেই চলবেন।
যে ৪ বিধায়কের বিরুদ্ধে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা হলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। এঁদের মধ্যে প্রথম তিনজন একুশের ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। এবং জিতেছেন। ঘটনা হল, তাঁরা মন্ত্রীও হয়ে গিয়েছেন। সোমবার তাঁরা মন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন।
তবে শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এবার তিনি ভোটে দাঁড়াননি। তবে এখন তিনি বিজেপির থেকে দূরে রয়েছেন যেন।
আইনজীবীদের মতে, যেহেতু এখনও বিধানসভার গঠন করা হয়নি। তাই এই ক্ষেত্রে রাজ্যপাল অনুমতি দিতে পারেন। নারদ কাণ্ড ঘটেছিল ২০১৬ সালে।
২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে নারদকাণ্ডের কথা প্রকাশ্যে আসে। সেখানে বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়ে যায়। অভিযোগ, তারা তাঁরা টাকা নিয়েছিলেন। এবং সেই সংক্রান্ত ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়। এঁদের মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রী এবং সাংসদও ছিলেন।
এই স্টিং অপারেশন করেছিলেন সাংবাদিক ম্যাথু স্য়ামুয়েল। তাঁর দাবি তৃণমূলের তৎকালীন সংসদ এই অপারেশনের জন্য অর্থ দিয়েছিলেন। এদিকে, নারদকান্ডে যাদের নাম জড়িয়েছিল তাঁরা হলেন মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার।
এছাড়া অভিযুক্তদের মধ্যে নাম রয়েছে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদের ভাই ইকবাল আহমেদ, শঙ্কুদেব পান্ডা, পুলিশকর্তা এস এম এইচ মির্জা।