বারাসত ও মধ্যমগ্রামের কালীপুজো গোটা রাজ্যের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও বিখ্যাত। গত কয়েক বছর ধরে নৈহাটির বড়মার পুজোতেও এই সময় প্রচণ্ড ভিড় হয়। বস্তুত, দুর্গাপুজোয় শহরতলি ও গ্রামের মানুষের ভিড় কলকাতামুখী হলেও, কালীপুজোয় কিন্তু ছবিটা একটু বদলে যায়। লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় জমান বারাসত, মধ্যমগ্রাম ও নৈহাটিতে। আর ঠাকুর দেখতে যাওয়ার জন্য অন্যতম মাধ্যম হল ট্রেন। পুজোর দিনগুলি বিধাননগর রোড ও দমদম জংশনে যাত্রীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে একাধিক পদক্ষেপ নিল ভারতীয় রেল। কালীপুজোর ভিড় সামলাতে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে শিয়ালদা ডিভিশনে। বিশেষ করে বিধাননগর রোড ও দমদম জংশন স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও যাত্রীদের যাতায়াত আরও স্বস্তিদায়ক করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে ইস্টার্ন রেলওয়ে।
কালীপুজোর জন্য ব্যবস্থা
কালীপুজোর দিনগুলিতে ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর সমস্ত লোকাল ট্রেন তার যাত্রাপথের সমস্ত স্টেশনে দাঁড়াবে। কোনও গ্যালোপিং লোকাল থাকবে না। শিয়ালদা স্টেশনের প্রতিটি টিকিট কাউন্টার ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর সারাদিন খোলা থাকবে। দমদম, বারাসত, নৈহাটি, বিধাননগর রোড, এই চারটি স্টেশনে ভিড়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশেষ নজর রাখছে রেল। যদি বাই চান্স কোনও ট্রেনের এই মুহূর্তে ঘোষিত প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তন করতে হয় সেটা হতে পর্যাপ্ত সময় রেখে অ্যানাউন্সমেন্ট করে পরিবর্তন করা হবে।
বিধাননগর রোড ও দমদম স্টেশনের জন্য সিদ্ধান্ত
পাশাপাশি বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে শিয়ালদা ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার রাজীব সাক্সেনা জানান, শিয়ালদা ডিভিশনের দুটি স্টেশনে নতুনভাবে প্ল্যাটফর্ম ভাগ করে, হকারমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলে ও আগেভাগে ঘোষণা ব্যবস্থা চালু করে যাত্রী চলাচল আরও সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিধাননগর রোড স্টেশনে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম শুধুমাত্র আপ মেন লাইনের লোকালের জন্য নির্দিষ্ট থাকবে। শিয়ালদা থেকে নৈহাটি, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, গেদে, লালগোলা যাওয়ার সমস্ত ট্রেন ১ নম্বরেই আসবে। সমস্ত আপ লোকাল, যেগুলি বারাসত, বনগাঁ, হাসনাবাদ, ডানকুনিতে যাবে, তা প্ল্যাটফর্ম নম্বর ২-এ আসবে। এ ছাড়া ২ নম্বর দিয়েই যাবে সমস্ত মেল, এক্সপ্রেস, প্যাসেঞ্জার ট্রেন। দমদম স্টেশনেও সমস্ত গুরুত্বপুর্ন আপ লোকাল উৎসবের সময় প্ল্যাটফর্ম ১ দিয়েই যাতায়াত করবে। এরমধ্যে রয়েছে নৈহাটি, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, গেদে, বহরমপুর কোর্ট এবং লালগোলা। এই সব স্টেশন থেকে শিয়ালদার দিকে যাওয়া ডাউন লোকালগুলি ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকবে। বারাসত, বনগাঁ, হাসনাবাদ, ডানকুনি যাওয়ার সমস্ত আপ লোকাল ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকবে।
থামবে না এক্সপ্রেস ট্রেন
ভিড় কমাতে বিধাননগর রোডে আটটি এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ তুলে নেওয়া হচ্ছে। রেল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ট্রেনে দৈনিক মাত্র দুই থেকে পাঁচজন যাত্রী ওঠানামা করেন। তাই বড় ভিড়ের স্টেশনে এই ট্রেনগুলির অপ্রয়োজনীয় থামানো বন্ধ করা হচ্ছে। এই এক্সপ্রেস ট্রেনগুলির মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনও রয়েছে। পাশাপাশি বিধাননগর স্টেশনের পুরো স্টেশন এলাকাকে ঘোষণা করা হবে ‘ভেন্ডর-ফ্রি জোন’। অর্থাৎ, কোনও হকার বা দোকানদার প্ল্যাটফর্মে বসতে পারবেন না। যাত্রীদের সুবিধার জন্য ট্রেনের ঘোষণা আগেভাগে করা হবে, যাতে বিভ্রান্তি না হয়। এই নতুন ব্যবস্থা কয়েকদিন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হবে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে তা স্থায়ীভাবে চালু করা হবে।