নিউ গড়িয়ার পঞ্চসায়রে বৃদ্ধা বিজয়া দাসের খুনের ঘটনায় রহস্য ফাঁস। পুলিশের জালে ধরা পড়ল বাড়ির আয়া ও তার পুরুষ সঙ্গী। জানা গিয়েছে, লুটের পরিকল্পনাতেই বাড়িতে আয়ার কাজ নিয়েছিল ধৃত আশালতা সর্দার। এরপর সঙ্গীর সঙ্গ ছক কষে বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালায় তারা। সোনার গয়না সহ একাধিক দামি জিনিস নিয়ে পালায়। সে সময়ে বৃদ্ধা বাধা দিতে গেলে তাঁর হাত-পা মুখ বেঁধে, ভারী বস্তু দিতে আঘাত করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয় ৮০ ছুঁইছুঁই বৃদ্ধার। তাঁর অর্থব ৮২ বছরের স্বামীকেও খাটের তলায় ফেলে দিয়ে যায় আয়া ও তার সঙ্গী।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ওই বৃদ্ধ দম্পতির দু'জনেই কার্যত অথর্ব ছিলেন। দুই ছেলেরা থাকেন জার্মানি এবং মুম্বইতে। সদ্য সেন্টার থেকে তাঁদের বাড়িতে আয়ার কাজে যোগ দিয়েছিলেন আশালতা সর্দার। স্থানীয় এক আয়া সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত সে। গত ১৭ অগাস্ট পঞ্চসায়রের এফ-১৫ নম্বর বাড়িতে দাস দম্পতির সেবা-শুশ্রুষায় রাখা হয়েছিল তাকে। সেই থেকেই বাড়িতে চুরির মতলব এঁটেছিল বলে পুলিশের অনুমান।
সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আশালতা দাস দম্পতির বাড়িতে কাজ করত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা ওই আয়া তার এক পুরুষ সঙ্গীকে নিয়ে ডিউটির পর বাড়িতে ঢোকে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তারা। কেটে দেয় সিসিটিভির তার। এরপরই লুট চালাতে থাকে। বৃদ্ধা বাধা দিলে তাঁর মুখে কাপড় গুঁজে দেওয়া হয়। হাত-পা বেঁধে একটি ভারী বস্তু দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। শরীর থেকে খুলে নেওয়া হয় সমস্ত গয়না। অর্থব বৃদ্ধকেও খাটের তলায় ফেলে দেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে সমস্ত লুট করে বাড়ির পিছনের গেট দিয়ে পালায় তারা।
শুক্রবার ভোরে ১৫ বছরের পরিচারিকা মধুমিতা প্রতিদিনের মতোই সামনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে যান। কিন্তু শত ডাকাডাকি করেও কারও সাড়া পাননি। এরপর দেখেন বাড়ির পিছনের গেট বাইরে থেকে বন্ধ। সন্দেহ হয় তাঁর। গেট খুলে ভিতরে প্রবেশ করে দেখেন সিঁড়ির কাছে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বিজয়া দাস। প্রতিবেশীদের ডাকেন মধুমিতা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। দ্রুত বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁর প্রাণ বাঁচেনি। এদিকে, অথর্ব প্রশান্ত কুমার দাসকে আত্মীয়ের বাড়ি পাঠানো হয়েছে।