শব্দবাজির জেরে রাজ্যে অঘটনের সংখ্যা নিছক কম নয়। শব্দবাজির বিকট আওয়াজ থেকে শিশু থেকে বৃদ্ধ, সকলকে রেহাই দিতেই ৯০ ডেসিবেল বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবার হঠাত্ শব্দবাজির শব্দমাত্রা বাড়িয়ে ১২৫ ডেসিবল করার ছাড়পত্র দিয়ে দিল রাজ্য সরকার। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এই পদক্ষেপে রীতিমতো বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ১২৫ ডেসিবলের শব্দবাজির এই নির্দেশে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, যে বাজিগুলি লুকিয়ে বিক্রি করা হত, তা এবার প্রকাশ্যেই বেচাকেনা চলবে।
ঠিক কী নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ?
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, একমাত্র গ্রিন ক্র্যাকার বা পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানো যাবে। কিন্তু রাজ্যে গ্রিন ক্র্যাকার তৈরির কারখানা প্রায় নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যেই বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের বহু মৃত্যু দেখেছে রাজ্যবাসী। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট পরিবেশবান্ধব বাজির ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট শব্দমাত্রা বেঁধে দেয়নি। তাই এ ক্ষেত্রে গোটা দেশে যে শব্দমাত্রা আছে সেটি মেনে নেওয়া হয়েছে। পরে আদালত যদি পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে কোনও নির্দেশ দেয়, তখন ফের সংশোধিত নির্দেশিকা দেওয়া হবে। একই বক্তব্য রাজ্য পরিবেশ দফতরের।
তবে রাজ্যে যে শব্দবাজির মাত্রা এতটা বাড়ানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। রাজ্যের পরিবেশকর্মীরা বলেছেন, অতীতে শব্দবাজির জন্য বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে। এতদিন সীমা থাকা সত্ত্বেও দেদার শব্দবাজি বেশি মাত্রায় ফাটানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও এই মাত্রা বাড়ানো কেন হল, তা বোঝার উপায় নেই। তাদের একাংশের মত, এত দিন ধরে বাজির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্ট এবং গ্রিন ট্রাইবুনাল যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা অমান্য করা হল।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'গত বছরও এই মাত্রা ৯০ ডেসিবেল রাখা হয়েছিল। তার পরে তো আর কোনও নির্দেশ কোর্ট দেয়নি। তা হলে এ বার আচমকা শব্দমাত্রা বাড়ানোর দরকার কী ছিল? এ রাজ্যে শব্দবাজির জন্য বহু লোক প্রাণ দিয়েছেন। এই নির্দেশিকা তাঁদের ভূমিকা মিথ্যা করে দিল।'