দূষণের কারণে ক্রমাগত ভয়াবহ হয়ে উঠছে শহর কলকাতা। তিলোত্তমায় বাড়ছে OZONE দূষণ। শুধু কলকাতা নয়, তালিকায় রয়েছে বেঙ্গালুরু, মুম্বই, হায়দরাবাদ ও চেন্নাইয়ের মতো দেশের বড় বড় শহর। সম্প্রতি সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (CSE) এই নিয়ে নতুন প্রতিবেদন সামনে এসেছে। সেই মোতাবেক, এই শহরগুলিতে OZONE স্তর বেশ কয়েক দিন ধরে ৮ ঘণ্টার মানের উপরে ছিল।
OZONE দূষণ কী? OZONE হল তিনটি অক্সিজেন অণু দিয়ে তৈরি একটি গ্যাস। আকাশে উঁচুতে, এই গ্যাস আমাদের সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করে। কিন্তু মাটির কাছে দূষণে পরিণত হয়। এই গ্যাস তৈরির সরাসরি কোনও উৎস নেই। যানবাহন, শিল্প এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সূর্যের আলোতে নির্গত নাইট্রোজেন অক্সাইড (NOx), উদ্বায়ী জৈব যৌগ (VOCs) এবং কার্বন মনোক্সাইড (CO) এর রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে তা তৈরি হয়। খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এই গ্যাস। সাধারণত শহরাঞ্চলে এর প্রভাব বেশি থাকলেও ইদানিং গ্রামের দিকেও ছড়িয়ে পড়ছে।
CSE-র রিপোর্ট অনুসারে এই গ্রীষ্মে (মার্চ-মে ২০২৫) অনেক শহরে OZONE-এর মাত্রা বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছে গিয়েছিল। দিল্লির রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। সেজন্য তা গবেষণার অন্তর্ভুক্ত।
কলকাতা: CSE-র রিপোর্ট অনুসারে ২২ দিন OZONE-এর মাত্রা বেড়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৪৫% কম। রবীন্দ্র সরোবর এবং যাদবপুর হটস্পটে পরিণত হয়েছে।
বেঙ্গালুরু: এই গ্রীষ্মে, ৯২ দিনের মধ্যে ৪৫ দিন OZONE-এর মাত্রা মানদণ্ডের উপরে ছিল। যা গত বছরের তুলনায় ২৯% বেড়েছে।
মুম্বই: ৯২ দিনের মধ্যে ৩২ দিন OZONE-এর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৪২% কম।
হায়দরাবাদ: ২০ দিন OZONE-এর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫৫% কম।
চেন্নাই: ১৫ দিন OZONE-এর মাত্রা বেড়েছে। গত বছর শূন্য ছিল। আলান্দুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
প্রতিটি শহরের কিছু নির্দিষ্ট এলাকা রয়েছে যেখানে OZONE-এর মাত্রা সবচেয়ে বাড়ে। এই গ্যাস শ্বাসনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। হাঁপানি এবং ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগ বাড়িয়ে দেয়। শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এই গ্যাস বিপজ্জনক। ফসলেরও ক্ষতি করে OZONE।
কেন এই দূষণ বাড়ছে? OZONE-এর বৃদ্ধি আবহাওয়া এবং দূষণের উৎসের উপর নির্ভর করে। তাপ এবং সূর্যালোক এর রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। যানবাহন, শিল্প, আবর্জনা পোড়ানো এবং কঠিন জ্বালানির ব্যবহার এই গ্যাস বৃদ্ধির মূল কারণ।
CSE-এর অনুমিতা রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, এই দূষণ নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে গুরুতর স্বাস্থ্য সংকট তৈরি হতে পারে। এই দূষণ আটকানোর জন্য যানবাহন চালানোর উপর রাশ টানতে হবে। শিল্পের আবর্জনা পোড়ানোর সময় সতর্ক থাকতে হবে।