
ফের খাস কলকাতায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ। ২৬ অক্টোবর রাতে কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলের নাইটক্লাবে হামলা ও যৌন নির্যাতনের চেষ্টা হয়েছে বলে এক মহিলা অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি তিনি একাধিক অভিযুক্তকে শনাক্তও করেছেন৷
তাঁর অভিযোগ থেকে জানা যায়, ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করছিলেন। এমতাবস্থায় নিজেদের টেবিলে বসে আনন্দ করার সময়ই সমস্যার সূত্রপাত। এমন পরিস্থিতিতে একদল পুরুষ তাঁদের সঙ্গে মারামারি শুরু করে। তারপরে তাঁকে শারীরিক নির্যাতন এবং যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ।
অভিযোগ পত্রে সেই মহিলা দুইজনের নামও জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনের নাম জুনেদ খান। অন্যজনের নাম নাসির খান। এছাড়া তাদের দলে থাকা অন্যান্যদের বিরুদ্ধেও করা হয়েছে অভিযোগ।
পার্কস্ট্রিট ধর্ষণকাণ্ডে জড়িত ছিল নাসির খান?
অভিযোগকারী মহিলা দাবি করেছেন, অভিযুক্ত নাসির খান ২০১২ সালের কলকাতায় পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। তবে এই বিষয়টা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
ওই মহিলার অভিযোগ খতিয়ে দেখলে জানা যায়, এই ঝামেলার সময় মহিলার ভাই তাঁকে বাঁচাতে যান। এই সময় ওই দলটি তাঁর দিকে গ্লাস ও বোতল ছুড়ে মারে। শুধু তাই নয়, যখন তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, তখন হামলাকারীরা প্রায় ২০ জন অতিরিক্ত লোককে ডেকে আনে। তারা আবার নতুন করে হামলা চালায়। এই সময়ই তিনি সাহায্যের জন্য পুলিশের জরুরি নম্বরে কল করেছিলেন। যদিও এই সময় ক্লাবের দরজা আটকে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এমনকী তাকে শারীরিকভাবে ধাক্কা দেওয়া এবং গোপনাঙ্গে স্পর্শ করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি।
কোন কোন ধারায় মামলা?
তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় বিএনএস-এর 126 (2), 115 (2), 117 (2), 351 (2), 3 (5), 74 ধারার অধীনে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার আইপিএস মুকেশ কুমার ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছেন, 'ওই মহিলার কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরেই আমরা অবিলম্বে একটি এফআইআর দায়ের করেছি। তদন্ত চলাকালীন, আমাদের দল ক্লাব থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। তার পরীক্ষা চলছে। নির্যাতিতার বক্তব্যও রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, আমরা প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখছি।'
বিধাননগর পুলিশের একটি সূত্রও দাবি করেছে যে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা মহিলা তাঁর স্বামী এবং ভাইয়ের সঙ্গে যে টেবিলে বসেছিলেন তা অভিযুক্তদের একজনের দ্বারা বুক করা হয়েছিল। মনে হচ্ছে, তারা একে অপরের পরিচিত ছিল। সেই নিয়ে বাদানুবাদ শুরু হয়। তারপর উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন ও যৌন নির্যাতনের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।