
কলকাতা মহানগরের প্রান্তে অবস্থিত ধাপা ঢিপি বা রাজারঘাট নতুনপাড়ার বাসিন্দারা তীব্র উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন। কারণ, নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়ায় তাঁদের অনেকেই নিজেদের পরিচয় প্রমাণে ব্যর্থ হচ্ছেন।
ধাপা ঢিপি একসময় ছিল শহরের আবর্জনা ফেলার জায়গা, আর এখন সেখানে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার পরিবারের বসতি। অধিকাংশই দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন এবং কোনও স্থায়ী জমির মালিক নন। এখানকার অনেকেরই বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে তাঁদের প্রমাণপত্র ও পরিচয়পত্র সব পুড়ে গেছে। ফলে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁদের বা তাঁদের বাবা-মায়ের নাম খুঁজে বের করাই এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিএলওরা (বুথ লেভেল অফিসার) জানিয়েছেন, এই বসতিগুলির বেশিরভাগ বাড়ির কোনও নম্বর নেই, ফলে নির্দিষ্ট বাসিন্দাদের খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণনার ফর্ম পূরণ করাচ্ছেন, কিন্তু অনেকেই শিক্ষার অভাবে নিজেরাই ফর্ম পূরণ করতে পারছেন না।
এই অবস্থায় স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলির অফিসগুলিই এখন সাধারণ মানুষের হেল্পলাইনে পরিণত হয়েছে। ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সন্দীপন সাহা বললেন, 'আমরা প্রতিটি অংশের ভোটার তালিকার সঙ্গে লিঙ্কযুক্ত পার্ট নম্বর ও QR কোডসহ ব্যানার লাগিয়েছি। কেউ চাইলে কোড স্ক্যান করে জানতে পারবেন তাঁদের বা তাঁদের পরিবারের নাম ২০০২ সালের তালিকায় আছে কি না। যারা ফর্ম পূরণ করতে জানেন না, আমরা তাঁদের সাহায্য করছি।'
ধাপা ঢিপির প্রায় ৫,৫০০ ভোটার এখন এই প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে উদ্বেগে রয়েছেন। যদি নির্বাচন কমিশন তাঁদের ডাকে, তাঁরা কীভাবে নিজেদের পরিচয় প্রমাণ করবেন, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।