আজ, সোমবার (২২ জানুয়ারি, ২০২৫) আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এক চিকিৎসকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের শাস্তি ঘোষণা করবে আদালত। সঞ্জয় রায়ের দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড অথবা ন্যূনতম যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি পেতে হতে পারে।
নৃশংস হত্যার ঘটনা ও তদন্তের মোড়
শিয়ালদা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস শনিবার সঞ্জয় রায়কে ২০২৪ সালের ৯ আগস্টের ঘটনার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেন। আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার কক্ষে এক ৩১ বছর বয়সী চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। তাকে যৌন নিপীড়ন এবং শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমাণ মেলে। এই ঘটনার ঠিক একদিন পর, ১০ আগস্ট, সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত ও শাস্তির বিধান
ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর ধারা ৬৪, ৬৬ এবং ১০৩(১)-এর অধীনে সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
ধারা ৬৪: ধর্ষণের জন্য ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
ধারা ৬৬: শিকারকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া বা গুরুতর শারীরিক ক্ষতির কারণে ২০ বছরের কারাদণ্ড বা যাবজ্জীবন।
ধারা ১০৩(১): হত্যার জন্য মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
আদালতের পর্যবেক্ষণ ও সমালোচনা
১৬০ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারক দাস পুলিশের তদন্ত ও হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের কার্যকলাপ নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, নিহত চিকিৎসকের বাবার কিছু প্রশ্নেরও উত্তর রায়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই মামলার তদন্ত প্রাথমিকভাবে কলকাতা পুলিশের হাতে থাকলেও পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্ট সেটি সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-এর কাছে হস্তান্তর করে।
সাজা ঘোষণার প্রাক্কালে সঞ্জয়ের দাবি ও পরিবারগুলোর প্রতিক্রিয়া
সাজা ঘোষণার সময় সঞ্জয় রায় দাবি করেছেন যে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তবে নিহত চিকিৎসকের পরিবার আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং ন্যায়বিচারের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
সমাজে প্রতিক্রিয়া
এই জঘন্য অপরাধ দেশজুড়ে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল এবং দীর্ঘ বিক্ষোভে শামিল হয়েছিল চিকিৎসা সমাজ। সোমবারের রায় শুধুমাত্র সঞ্জয় রায়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না, বরং এই ধরনের অপরাধ রোধে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে। সাজা ঘোষণার জন্য সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আদালতে চূড়ান্ত রায় শোনা হবে।